
বিসিবি নির্বাচনের পর এক মাসের কম সময়ে বিপিএল আয়োজনকে অসম্ভবের কাছ থেকে সম্ভবের পথে টেনে এনেছে বিসিবি। দুই দফা যাচাই–বাছাই, কাগজপত্রের খুঁটিনাটি বিশ্লেষণ, আর্থিক স্বচ্ছতা পরিমাপ, সবকিছু পেরিয়ে শেষ পর্যন্ত পাঁচ প্রতিষ্ঠান পেয়েছে দল গঠনের চূড়ান্ত অনুমতি।
তবে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষা শেষ হয়নি এখনও। আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে ব্যর্থ হলে চূড়ান্ত হওয়া প্রতিষ্ঠানও ড্রাফটের টেবিলে বসার সুযোগ পাবেন না বলে জানান বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ও বিসিবি পরিচালক ইফতেখার রহমান।
অভিযোগ আর অনিয়মে দগ্ধ আগের আসরের অভিজ্ঞতা পেছনে ফেলে এবার বোর্ডের লক্ষ্য বিতর্কমুক্ত বিপিএল আয়োজন করা। এ কারণেই নির্বাচনের পর মাত্র এক মাসের কম সময়ে বিপিএল আয়োজনকে ‘নেক্সট টু ইমপসিবল’ বলেছিলেন গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান। সেই অবস্থা থেকে সম্ভবের পথে আনার কঠিন দায়িত্ব কতটুকু মূল্যায়ন পাওয়া উচিত, তা মনে করিয়ে দিলেন বিসিবির সহ–সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন।
মঙ্গলবার রাতে গুলশানের নাভানা টাওয়ারে বিসিবির বিপিএল কার্যালয়ে চূড়ান্ত দল নির্বাচনের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে দ্বিতীয় দফা যাচাই–বাছাই ও মূল্যায়ন শেষে তিনটি প্রতিষ্ঠানের আবেদন বাতিল করে ১২তম বিপিএলের পাঁচটি দল চূড়ান্ত করে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল।
বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইফতেখার রহমান সংবাদ সম্মেলনে জানান, প্রথম ও দ্বিতীয় দফায় আগ্রহী আট আবেদনকারীর মধ্য থেকে আর্থিক সক্ষমতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানকে নতুন মৌসুমের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছে।
নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানগুলো হলো রংপুরের জন্য টগি স্পোর্টস, চট্টগ্রামের জন্য ট্রায়াঙ্গল সার্ভিসেস, ঢাকার জন্য চ্যাম্পিয়ন স্পোর্টস, রাজশাহীর জন্য নাবিল গ্রুপ এবং সিলেটের জন্য ক্রিকেট উইথ সামি।
তাতে বাদ পড়েছে দেশ ট্রাভেলস (রাজশাহী), আকাশবাড়ী হলিডেজ (বরিশাল) এবং এসএস গ্রুপ টেন টুয়েলভ স্পোর্টস (কুমিল্লা ফাইটার্স নামের আগ্রহী প্রতিষ্ঠান)।
তাদের বাদ পড়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে গভর্নিং কাউন্সিল জানায়, জমা দেওয়া কাগজপত্র চূড়ান্ত মূল্যায়নে সন্তুষ্ট করতে পারেনি। আর্থিক সক্ষমতা ও স্বচ্ছতার বিষয়ে কোনো ছাড় দেওয়া হয়নি। লিগ্যাল টিমের নিরীক্ষায়ও বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে।
বিপিএলে দল পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো শেষ পর্যন্ত কোন নামে মাঠে নামবে, তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নাম নির্ধারণ করবে বিসিবির বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। সদস্য সচিব জানান, ১৯ ডিসেম্বর থেকে ১৬ জানুয়ারির মধ্যে টুর্নামেন্ট আয়োজন করতে চান তারা।
বিপিএল শেষেই ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ অভিযান। তাই দলের ক্রিকেটারদের বিশ্রামের দিকও বিসিবি নজর রাখছে বলে জানান বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনের চেয়ারম্যান নাজমুল আবেদীন ফাহিম।
‘‘অবশ্যই আমাদের হিসাব–নিকাশের মধ্যে দুটো বিষয় আছে। একটি হলো, বিপিএলের আগেও আমরা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে একটি সিরিজ খেলছি। এরপর একটি বিরতি প্রয়োজন, যাতে খেলোয়াড়রা বিপিএলের জন্য প্রস্তুত হতে পারে। একই সময়ে বিপিএল শেষ হওয়ার পর আমাদের সামনে বিশ্বকাপ। তাই সেখানে বিপিএলের পরে একটি বিশ্রামের সময় রাখা হয়েছে। এরপর আবার প্রস্তুতির দরকার হবে।”
“সবকিছু মিলিয়েই এই সময়সূচি ঠিক করা হয়েছে। দুই দিকেই যথেষ্ট সময় রাখা হয়েছে, যাতে খেলোয়াড়রা সম্পূর্ণ সতেজ থাকে। বিপিএলের জন্যও যেমন, একইভাবে বিশ্বকাপের জন্যও সতেজ থাকবে।’’
আপনার মতামত লিখুন :