
নাবিল সামাদের ডেলিভারিটি ছিল একটু জোরের ওপর। সুইপ করার চেষ্টায় ব্যাট-বলে করতে পারলেন না জিসান আলম। জোরাল আবেদনে আঙুল তুলে দিতে খুব বেশি সময় নিলেন না আম্পায়ার। হতাশায় হনহন করে ড্রেসিং রুমর দিকে হাঁটা দিলেন তরুণ ব্যাটসম্যান। আরও একবার প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম শতরানের কাছাকাছি গিয়েও হতাশা নিয়ে ফিরলেন আগ্রাসী ব্যাটসম্যান।
আগে একবার ৯৭ রানে আউট হয়েছিলেন জিসান। এবার তিনি কাটা পড়লেন ৯৪ রানে। জিসানের আক্ষেপের দিনে কাঙ্ক্ষিত শতরান পেয়েছেন মুশফিকুর রহিম।
মুশফিক দিন শুরু করেছিলেন ৯৩ রানে। দলের উইকেট বাকি তখনও তিনটি। শতরান নিয়ে শঙ্কা তখনও ছিল না। কিন্তু সকালে দ্রুতই আউট হয়ে যান ইবাদত হোসেন চৌধুরি ও সৈয়দ খালেদ আহমেদ। মুশফিক তখন অপরাজিদ ৯৬ রানে।
তবে শেষ ব্যাটসম্যান নাবিল সামাদ এক প্রান্ত আগলে রাখেন। পেসার এনামুল হককে স্কুপ করে চার মেরে সেঞ্চুরিতে পৌঁছে যান মুশফিক। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার ১৯তম সেঞ্চুরি এটি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজ ও নিজের শততম টেস্টের আগে তার প্রস্তুতিও হলো দারুণ।
নাবিল ১৭ বল খেলে কোনো রান করেননি, আউটও হননি। ১১৫ রানে তাইবুর পারভেজের বলে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে মুশফিকের আউটে শেষ হয় সিলেট বিভাগের ইনিংস।
ঢাকা বিভাগ ২০ রানের লিড পেলেও ম্যাচ ড্র হওয়া তখন নিশ্চিত। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৯৮ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন জিসান আলম ও আনিসুল ইসলাম ইমন।
স্বভাববিরুদ্ধ ব্যাটিংয়ে ৮২ বল খেলে ৩৬ রান করেন আনিসুল। দ্বিতীয় উইকেটে জিসান ও আশিকুর রহমান শিবলি গড়েন আরেকটি ভালো জুটি।
শতরানের সুবাস পেয়েও হারিয়ে ফেলেন জিসান। ৯ চার ও ৪ ছক্কায় ১২৫ বলে ৯৪ রান করেন তিনি। আশিকুর অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে।
২ উইকেটে ২২২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে ঢাকা। সিলেট আবার ব্যাটিংয়ে নামার পর ৪ ওভার খেলেই ড্র হয় ম্যাচ।
সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিক
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩১০
সিলেট বিভাগ ১ম ইনিংস: ১০২.২ ওভারে ২৯০ (আগের দিন ২৬০/৭) (মুশফিক ১১৫, ইবাদত ৯, খালেদ ৪, নাবিল ০*, রিপন ২১-৩-৫০-৪, সুমন ১৮-৩-৫৬-০, নাজমুল অপু ৩৩-৬-৭৫-২, এনামুল ১৯-৪-৬৮-২, তাইবুর ৭.২-৩-২২-১, আনিসুল ৪-০-১৬-০)।
ঢাকা বিভাগ ২য় ইনিংস: ৬৪ ওভারে ২২২/২ (ডি.) (আনিসুল ৩৬, জিসান ৯৪, আশিকুর ৫৯*, মার্শাল ১৬*; ইবাদত ৬-০-২০-০, তোফায়েল ৮-০-৩৮-০, নাবিল ২৬-১-৮৬-১, খালেদ ২-০-৬-০, শাহানুর ১১-০-৩১-১, আল গালিব ১১-০-২৯-০)।
সিলেট ২য় ইনিংস: ৪ ওভারে ১৩/০
সালমানের সেঞ্চুরি
বৃষ্টির কারণে এই ম্যাচও ড্র হওয়া নিশ্চিত ছিল আগেই। শেষ দিকে কাঙ্ক্ষিত শতরান করেন সালমান হোসেন ইমন।
৭৫ রানে দিন শুরু করা ব্যাটসম্যান অপরাজিত থাকেন ১২০ রানে। ৭৬ ম্যাচের প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে তার তৃতীয় শতরান এটি।
৪ উইকেটে ২৫৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে বরিশাল বিভাগ।
প্রথম ইনিংসে ৩৫৮ রান করা চট্টগ্রাম দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ ওভার খেলেই ইনিংস ঘোষণা করে চট্টগ্রাম। বাংলাদেশ টেস্ট দলে ফেরা মাহমুদুল হাসান জয় ১৪ বলে করেন ২৫ রান।
পরে বরিশাল ৯ ওভার ব্যাট করার পর ড্র হয় ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩৫৮
বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ৮৮ ওভারে ২৫৯/৪ (ডি.) (আগের দিন ১৬৬/২) (জাহিদ ৪৩, সালমান ১২০, শামসুর ১৩, তাসামুল ২১*; হাসান ২১-৫-৬৮-০, আশিক ১৩-৩-৪০-১, মুরাদ ২১-৫-৬১-২, নাঈম ২১-৫-৪৮-১, আশরাফুল ১১-১-২৭-০, জয় ১-০-৫-০)।
চট্টগ্রাম বিভাগ ২য় ইনিংস: ৪ ওভারে ৩৫/০ (ডি.) (জয় ২৫*, সাদিকুর ১০*, মইন ২-০-২৪-০, তানভির ২-০-১১-০)।
বরিশাল বিভাগ ২য় ইনিংস: ৯ ওভারে ১৯/০
ফলো-অনের পর রক্ষা রংপুরের
বড় ইনিংসে বড় স্কোরের পরও বৃষ্টির কারণে গোটা এক দিন খেলা না হওয়ায় হতাশ ছিল ময়মনসিংহ বিভাগ। শেষ দিনে রংপুর বিভাগকে ১২৭ রানে গুটিয়ে দিয়ে ম্যাচে প্রাণ ফেরার তারা। তবে শেষ পর্যন্ত নাটকীয় কিছু হয়নি।
২ উইকেটে ১৮ রান নিয়ে দিন শুরু করা রংপুর উইকেট হারায় নিয়মিত বিরতিতে। আট নম্বরে নেমে তিনটি করে চার ও ছক্কায় অপরাজিত ৪৫ রান করেন আলাউদ্দিন বাবু। ইনিংস শেষ হয় ১২৭ রানে।
দ্বিতীয় ইনিংসে কোনো বিপর্যয় হয়নি রংপুরের। উদ্বোধনী জুটিতে ৫০ রান তোলেন মিম মোসাদ্দেক ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। মিম আউট হন ৬০ বলে ১৭ রান করে।
আল মামুন ছয়টি ছক্কা মেরে ৮৫ বলে ৬৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। রংপুর দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ১১২ রান তোলার পর শেষ হয় ম্যাচ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ময়মনসিংহ বিভাগ ১ম ইনিংস: ৫৫৬/৬ (ডি.)
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ৪৫.১ ওভারে ১২৭ (আগের দিন ১৮/২) (মিম ১৪, নাঈম ২৩, আকবর ৭, নাসির ১৯, তানভরি ০, আলাউদ্দিন ৪৫*, সাকলাইন ০, হাশিম ১, মেহেদি ০; আবু হায়দার ১৪-২-৩৯-২, শহিদুল ১২-৪-৩০-২, রকিবুল ৬-২-১৮-১, শুভাগত ৩-১-৭-১, আরিফ ১০.১-৪-২৮-৩)।
রংপুর বিভাগ ২য় ইনিংস: (ফলো-অনের পর) ৩৩ ওভারে ১১২/২ (মিম ১৭, আল মামুন ৬৯*, ইকবাল ৮, জাভেদ ১০*; আবু হায়দার ৩-০-১১-০, রকিবুল ৩-১-৯-০, শুভাগত ১০-২-৪৫-০, আরিফ ১১-৪-২৫-২, গালিব ৩-০-৮-০, আমিনুল ২-০-৬-০, আইচ ১-০-১-০)।
আপনার মতামত লিখুন :