
টি-টোয়েন্টি সিরিজে খেলতে অধিনায়ক লিটন কুমার দাস ও আরও কয়েকজনের সঙ্গে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে যান মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিন। কিন্তু সন্ধ্যায় ঘোষিত স্কোয়াড বড় বিস্ময় হয়ে আসে অনেকের জন্য। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই টি-টোয়েন্টির দলে নেই তার নাম!
বাংলাদেশ ক্রিকেটে দল নির্বাচন নিয়ে অদ্ভুত বিতর্ক নতুন নয় কিছু নয়। কখনও দেখা গেছে, কোনো সফরে এমন ক্রিকেটারকে দলে নেওয়া হয়েছে, যার ভিসা নেই। কখনও আবার স্কোয়াডে থাকা কাউকে বসিয়ে রেখে হঠাৎ করে দেশ থেকে সরাসরি উড়িয়ে আনা হয়েছে অন্য কাউকে। এবারের ঘটনাও জন্ম দেয় প্রবল কৌতূহল আর প্রশ্নের।
চট্টগ্রামে পাঠিয়েও সাইফ উদ্দিনকে কেন দলে রাখা হয়নি, সেটি জানতে চাওয়া হয়েছিল প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেনের কাছে। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে শুক্রবার তিনি শুধু ব্যাখ্যা করলেন এই অলরাউন্ডারকে দলে না রাখার কারণ।
‘এটা ১৫ জনের স্কোয়াড। বিশ্বকাপের যখন দল যাবে তখনও ১৫ জনের স্কোয়াডই যাবে। এখন থেকেই আমরা ১৫ জনের মধ্যেই কম্বিনেশন সেট করার চেষ্টা করব। স্কোয়াডে চারটা সিমার (পেসার) রাখতে গেলে আমাকে কাউকে না কাউকে বাদ দিতেই হতো। এই স্কোয়াড তো প্রথম দুই ম্যাচের। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। পরের দিকে (সাইফ উদ্দিন) থাকবে হয়তো।”
‘‘আমার ১৫ জন ক্রিকেটাকে দিয়ে দল দিতে হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে যাদেরকে অন বোর্ড (দলভুক্ত করা) করতে পারব, তাদের নিয়ে দল সাজিয়েছি।’’
সাইফ উদ্দিন সবশেষ খেলেছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবিতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে। আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করার সেই ম্যাচে ৩ ওভারে ১৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। ওয়াফিউল্লাহ তারাখিল, সেদিকউল্লাহ আটাল ও দারভিশ রাসুলিকে ফিরিয়ে আফগানদের আটকে রাখায় ভূমিকা রেখেছিলেন এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার। তার বাদ পড়ায় তাই কিছুটা প্রশ্নের অবকাশ থাকে।
যদিও উইকেট-কন্ডিশন বিবেচনায় দলীয় সমন্বয়ের কারণে বাদ পড়াটা অস্বাভাকিক নয়। তবে মূল প্রশ্ন, তাকে দলে না রাখা হলে চট্টগ্রামে কেন পাঠানো হলে? দল নির্বাচন তো আগেই হয়ে যাওয়ার কথা। তবে কি শেষ মুহূর্তে কোনো পরিবর্তন আনা হয়েছে দলে বা ভাবনার পরিবর্তন হয়েছে?
বিসিবির একটি সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, সাইফ উদ্দিনকে তৃতীয় টি-টোয়েন্টির দলে রাখা হতে পারে এবং আগামী বিশ্বকাপের জন্য সম্ভাব্য যে বড় তালিকা আছে, সেখানেও তিনি আছেন। তাকে দলের সঙ্গে রাখার ভাবনাতেই মূলত চট্টগ্রামে পাঠানো হয়েছে। শনিবার থেকে চার ভেন্যুতে শুরু হচ্ছে জাতীয় ক্রিকেট লিগ। তিনি যদি জাতীয় লিগ খেলতে যান এবং পরে তৃতীয় টি-টোয়েন্টির দলে তাকে রাখা হয়, তাহলে মানসিক ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি তার জন্য চ্যালেঞ্জিং হয়ে দাঁড়াবে। তাই আপাতত তাকে দলের সঙ্গেই অনুশীলনে রেখেছে টিম ম্যানেজমেন্ট।
এই ব্যাপারগুলো সমন্বয়ের দায়িত্ব যাদের, বিসিবির সেই ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান নাজমূল আবেদীনের কাছেও জানতে চাওয়া হয়েছিল সাইফের প্রসঙ্গে। প্রধান নির্বাচকের মতো তিনিও খুব গভীরে যেতে চাইলেন না।
‘‘সাইফ উদ্দিন দলে না থাকলেও চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টি দলের প্রস্তুতিতে ওকে দরকার। আমরা আগেও এমনটা করেছি, টিম কম্বিনেশনের কারণে কেউ স্কোয়াডে না থাকলেও, প্রস্তুতির স্বার্থে তাকে রাখা হয় দলের সঙ্গে। এটাও তেমনই একটা সিদ্ধান্ত।’’
চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লা. লে. মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথমটি সোমবার, পরের দুটি ম্যাচ বুধবার ও শুক্রবার।
আপনার মতামত লিখুন :