সকাল সোয়া ১০টার দিকে যখন মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে এলেন তামিম ইকবাল, সম্ভাব্য চিত্র পরিস্কার হয়ে গেল তখনই। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনে তার এখানে আসার অন্য কোনো কারণ তো থাকার কথা নয়! একটু পরে নিশ্চিত করে দিলে তিনি নিজেই। বিসিবির নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না দেশের সাবেক এই অধিনায়ক।
তামিম একাই নন, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন এ দিন আরও ১৪-১৫ জন।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সময় বুধবার সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। দুপুর ২টায় আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হলে চূড়ানত সংখ্যা জানা যাবে।
প্রত্যাহারকারীদের একজন এক্মিওম ক্রিকেটার্সের কাউন্সিলর ইসরাফিল খসরু পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বলেন, সরকারের একটি গোষ্ঠীর হস্তক্ষেপের প্রতিবাদে তাদের এই সিদ্ধান্ত।
“বিসিবি নির্বাচনে নগ্ন হস্তক্ষেপ চলছে। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ এখানে নেই। স্বেচ্ছাচারিতা করা হচ্ছে। নতুন বাংলাদেশে এই ধরনের কোনো নির্বাচন আমরা চাই না।
“সরকারের একটি গোষ্ঠী এখানে হস্তক্ষেপ করছে। আপাতত এটুুকুই বলতে পারি। শিগগিরই সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত বলব আমরা।”
মনোয়নয়ত্র প্রত্যাহার করে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কারণ জানাননি তামিম। তবে কারণটা যে একই, তা অনুমান করে নেওয়াই যায়।
কিছুদিন আগেই একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি অভিযোগ করেছিলেন, সরকারের একটি অংশ বিসিবি নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। গত শনিবার বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, প্রবল চাপ অনুভব করছেন তিনি।
“আমার ওপরে অনেক চাপ আছে। কালকে আমার কাউন্সিলরশিপ বাতিলও হয়ে যেতে পারে। কেন হতে পারে, এটা আপনারা খুব ভালো করেই বোঝেন…।
“ফেয়ার ইলেকশন কেন হবে না? আমাদের এই মুহূর্তে যে সরকার আছেন, এই সরকারের দায়িত্বের মধ্যে কি এটা নাই যে সংস্কার করতে হবে? সরকারের একটি অংশই যদি এভাবে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করে, তাহলে এটা কি একটা দারুণ উদাহরণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে? আমি প্রেস কনফারেন্সে (কয়েক দিন আগে) যা যা বলেছিলাম, আপনারা তা-ই দেখেছেন। উল্টা-উল্টা সব ঘটেছে। আমার একটা জিনিসই বলার, আমার পক্ষ হয়ে কারও কোনো কথা বলার দরকার নাই। সত্যিটার পক্ষে কথা বলুন।
“আমার বয়স হয়তো কম, কিন্তু আমি সিনিয়রদের (সংগঠক) থেকে শুনেছি, ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে কোনদিন এত নোংরামি তারা দেখেননি। যে জিনিসটা আপনারা করে যাচ্ছেন, করছেন, এটা কিন্তু একটা ইতিহাস হয়ে যাবে এবং পরবর্তীতেও কিন্তু এই জিনিসগুলোই অনুসরণ করা হবে। কাজেই আমার বিনয়ী অনুরোধ, এই জিনিসগুলো আপনারা করবেন না। সৎভাবে নির্বাচন আয়োজন করুন।”
বিসিবি নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত থাকতে পারবেন কি না, এই শঙ্কা তখনই ছিল তার।
“আপনারা আমাকে প্রশ্ন করতে পারেন যে আমি নির্বাচন করব কী করব না। আমার প্রশ্ন হলো যে, আমাকে নির্বাচন করতে দেবে কী দেবে না, এটাও তো দেখতে হবে।”
আপনার মতামত লিখুন :