উইমেন’স বিশ্বকাপ
ভালো শুরুর পর এক ওভারে তিন ব্যাটারের বিদায়। দুইশর আগে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়া দলকে টানলেন দীপ্তি শার্মা ও আমানজোত কৌর। সপ্তম উইকেটে শতরানের জুটিতে এনে দিলেন আড়াইশ ছাড়ানো পুঁজি। পরে বোলারদের সম্মিলিত চেষ্টায় শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে উইমেন’স বিশ্বকাপ শুরু করল ভারত।
গুয়াহাটিতে মঙ্গলবার টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে ডাকওয়ার্থ-লুইস ও স্টার্ন পদ্ধতিতে ৫৯ রানে জিতেছে ভারত। বৃষ্টির বাধায় ৪৭ ওভারে নেমে আসা লড়াইয়ে ২৬৯ রান করে লঙ্কানদের ২১১ রানে থামিয়ে দেয় তারা।
ব্যাটে-বলে আলো ছড়িয়ে ভারতের এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান রাখেন দীপ্তি। ছয়ে নেমে ৩ চারে ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। পরে অফ স্পিনে ৫৪ রান খরচায় নেন ৩ উইকেট।
দলকে জিতিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জিতেছেন এই অলরাউন্ডার।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটিতে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৫৭ রান করেন আমানজোত। দীপ্তির সঙ্গে গড়েন ১০৩ রানের জুটি।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসে ৯ জনই দুই অঙ্ক স্পর্শ করেন। কিন্তু ফিফটি করতে পারেননি কেউ। সর্বোচ্চ ৪৩ রান করার পথে তিনটি ছক্কা ও ৪টি চার মারেন অধিনায়ক চামারি আতাপাত্তু।
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে চতুর্থ ওভারে ফর্মের তুঙ্গে থাকা স্মৃতি মান্ধানাকে হারায় ভারত। বিশ্বকাপের আগেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টানা দুটি সেঞ্চুরি করা তারকা ওপেনার এদিন করেন ২ চারে ৮ রান।
স্বাগতিকরা শুরুর এই ধাক্কা সামাল দেয় প্রাতিকা রাওয়াল ও হারলিন দেওয়ালের ব্যাটে। প্রাতিকাকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া ৬৭ রানের জুটি ভাঙেন ইনোকা রানাউইরা। ১ ছক্কা ও ৩টি চারে ৩৭ রান করেন ওপেনার প্রাতিকা।
২৬তম ওভারে তিন শিকার ধরে ভারতকে চেপে ধরেন ইনোকা। ৬ চারে ৪৮ রান করা হারলিনকে বিদায় করার পরের বলে জেমিমাহ রদ্রিগেজের স্টাম্প ভেঙে দেন বাঁহাতি স্পিনার। ওভারের পঞ্চম বলে কট বিহাইন্ড হন ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রিত কৌর (২ চারে ২১)।
পরের ওভারে রিচা ঘোষ ফিরলে অল্পতে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে ভারত। ১২৪ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে কক্ষপথে ফেরান দীপ্তি শার্মা ও আমানজোত কৌর।
তাদের জুটি অবশ্য চার দফায় ভাঙার সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি শ্রীলঙ্কা। ১৮, ৩৭, ৫০ ও ৫৩ রানে চারবার জীবন পান আমানজোত। বারবার বেঁচে গিয়ে তিনি ৪৫ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন। দীপ্তি ষোড়শ ওয়ানডে ফিফটিতে পা রাখেন ৫০ বলে।
শেষ দিকে দুটি করে ছক্কা-চারে ১৫ বলে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলেন স্নেহ রানা।
রান তাড়ায় সপ্তম ওভারে হাসিনি পেরেরাকে হারায় শ্রীলঙ্কা। তবে দলকে চাপে পড়তে দেননি আতাপাত্তু। হারশিথা সামারাউইক্রামার সঙ্গে গড়া ৫২ রানের জুটিতে অর্ধেকের বেশি রানই তার।
আতাপাত্তুকে বোল্ড করে প্রতিপক্ষের রানের চাকায় বাঁধ দেন দীপ্তি। এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লঙ্কানরা। তাদের আর কোনো জুটি ছুঁতে পারেনি পঞ্চাশ।
দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে ছয়ে নামা নিলাকশিকা সিলভার ব্যাট থেকে, ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ২০ বলে ৩৫। ত্রিশ ছুঁতে পারেননি আর কেউ।
ভারতের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন স্নেহ রানা ও শ্রী চারানি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ভারত: ৪৭ ওভারে ২৬৯/৮ (প্রাতিকা ৩৭, মান্ধানা ৮, হারলিন ৪৮, হারমানপ্রিত ২১, জেমিমাহ ০, দীপ্তি ৫৩, রিচা ২, আমানজোত ৫৭, স্নেহ ২৮*; আছিনি ৮-০-৪২-১, উদেশিকা ১০-১-৫৫-২, সুগান্দিকা ৯-০-৪৬-০, কাভিশা ৮-০-৫১-০, ইনোকা ৯-০-৪৬-৪, আতাপাত্তু ৩-০-২৪-১)
শ্রীলঙ্কা: ৪৫.৪ ওভারে ২১১ (হাসিনি ১৪, আতাপাত্তু ৪৩, হারশিথা ২৯, ভিশ্মি ১১, কাভিশা ১৫, নিলাকশিকা ৩৫, আনুশকা ৬, সুগান্দিকা ১০, আছিনি ১৭, উদেশিকা ১৭*, ইনোকা ৩; ক্রান্তি ৯-০-৪১-১, আমানজোত ৬-০-৩৭-১, স্নেহ ১০-০-৩২-২, দীপ্তি ১০-০-৫৪-৩, শ্রী ৮-০-৩৭-২, প্রাতিকা ২.৪-০-৬-১)
ফল: ডিএলএস পদ্ধতিতে ভারত ৫৯ রানে জয়ী
প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: দীপ্তি শার্মা
আপনার মতামত লিখুন :