দুই ম্যাচের চিত্র অনেকটা একই। আগে ব্যাট করা দল প্রত্যাশিত স্কোর গড়তে পারল না। কিন্তু বোলারদের সম্মিলিত পারফরম্যান্সে সেই দুই দলই জিতে গেল বেশ সহজে। জয়ের ব্যবধানও কাছাকাছি, ঢাকা মেট্রোর জয় ২৩ রানে, ঢাকা বিভাগের ২৮ রানে।
ব্যাটে-বলে পারফর্ম করে ঢাকা মেট্রোর জয়ে বড় অবদান রেখে টি-টোয়েন্টি অভিষেক রাঙালেন আইচ মোল্লা। ক্যামিও ইনিংস খেলার পর বল হাতেও উজ্জ্বল সুমন খান, ঢাকা বিভাগের জয়ে তার মতোই দারুণ বোলিংয়ে ভূমিকা রাখলেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুও।
অভিষেকেই নায়ক
বয়সভিত্তিক ক্রিকেট পেরিয়ে বছর তিনেক ধরে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছেন আইচ মোল্লা। অন্য দুই সংস্করণে খেললেও স্বীকৃতি টি-টোয়েন্টিতে প্রথম মাঠে নামলেন এই ম্যাচ দিয়েই। ২২ বছর বয়সী ক্রিকেটার অভিষেক স্মরণীয় করে রাখলেন ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সে।
সিলেটে জাতীয় লিগ টি-টোয়েন্টির ম্যাচটিতে সিলেট বিভাগকে ২৩ রানে হারায় ঢাকা মেট্রো।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা মেট্রোর শুরুটা ছিল মন্থর। উইকেট না হারিয়েও পাওয়া প্লেতে রান ওঠে কেবল ৩৭।
পরে মাহফিজুল ইসলাম রবিন আউট হন ২৩ বলে ১৮ রানে। অধিনায়ক মোহাম্মদ নাঈম শেখ দশম ওভারে ফেরেন ৩২ বলে ৩৬ রান করে।
ইনিংসের গতি বদলে দেন সাদমান ইসলাম ও আইচ মোল্লা। দারুণ ব্যাটিংয়ে ১০ ওভারে ৯৬ রানের জুটি গড়েন দুজন।
বাংলাদেশ টেস্ট দলের ওপেনার সাদমান তিনে নেমে ৩২ বলে ৪৯ রান করে শেষ ওভারে আউট হন সীমানায়। ৩৩ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন আইচ।
প্রথম ১০ ওভারে ৬০ রান তোলা ঢাকা মেট্রো পরের ১০ ওভারে তোলে ১০১।
১৬২ রান তাড়ায় সিলেটের শুরুটাও খুব গতিময় হয়নি। প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের সবাই ১৫ পেরিয়ে গেলেও কেউ ২৫ ছুঁতে পারেননি।
একটু আগ্রাসী হয়ে উঠছিলেন যে দুজন, সেই অমিত হাসান ও আসাদুল্লাহ আল গালিবও টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। দুই ছক্কায় ১৬ বলে ২৪ করেন অমিত, ১৪ বলে ২৩ গালিব।
পরে রেজাউর রহমান রাজা দুই ছক্কায় ১৩ বলে ১৭ রান করলেও সিলেট সেভাবে সম্ভাবনা জাগাতে পারেনি।
৫৩ রানের পর একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচের সেরা আইচ।
চার ম্যাচে ঢাকা মেট্রোর জয়-পরাজয় দুটি করে, সিলেট হারল তিনটিতেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা মেট্রো: ২০ ওভারে ১৬১/৩ (মাহফিজুল ১৮, নাঈম শেখ ৩৬, সাদমান ৪৯, আইচ ৫৩*, আবু হায়দার ০*; গালিব ৪-০-২৪-১, ইবাদত ৪-১-২৩-১, খালেদ ৪-০-৪৪-০, নাবিল ৩-০-২৪-১, রেজাউর ৪-০-৩২-০, নাঈম ১-০-১০-০)।
সিলেট বিভাগ: ২০ ওভারে ১৩৮/৯ (দিশান ১৬, জাকির ১৯, খালিদ ২৪, অমিত ২৪, গালিব ২৩, তোফায়েল ৪, রেজাউর ১৭, খালেদ ৪, নাঈম ২, ইবাদত ০*, নাবিল ১; আবু হায়দার ৪-০-২৫-২, রকিবুল ৪-০-২৯-১, মারুফ ৪-০-২৯-২, শহিদুল ৪-০-২৪-৩, আইচ ৪-০-৩০-১)।
ফল: ঢাকা মেট্রো ২৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: আইচ মোল্লা।
শীর্ষে ঢাকা বিভাগ
উইকেট বিবেচনায় ১৫০ রানের পুঁজি এমনিতে খুব বড় নয়। তবে তাতেই ধরা দিল ঢাকা বিভাগের ২৮ রানের জয়। চার ম্যাচে তিন জয় ও পরিত্যক্ত ম্যাচের এক পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকা উদ্বোধনী জুটিতে পায় ৫০ রান। যদিও রানের গতি খুব ভালো ছিল না। আশিকুর রহমান শিবলি আউট হন ২০ বলে ২২ রান করে, ৩০ বলে ৩২ করেন রায়ান রাফসান রহমান।
অধিনায়ক মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন চারে নেমে চার ছক্কায় ২০ বলে ৩৫ রান করে রানের গতিতে একটু দম দেন। তবে তাইবুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, শুভাগত হোমের মতো অভিজ্ঞরা তেমন কিছু করতে পারেননি।
শেষ দিকে সুমন খানের দুই ছক্কায় ১৫০ স্পর্শ করে ঢাকা বিভাগ।
সুমন পরে বল হাতে গুরুত্বপূর্ণ দুটি উইকেট নেন। নতুন বলে শুরু করা নাজমুল ইসলাম অপুর বোলিং ফিগার ছিল অসাধারণ ৪-১-১০-৩!
রাজশাহী বিভাগের অধিনায়ব নাজমুল হোসেন শান্তকে বোল্ড করে শিকার শুরু করেন নাজমুল। আরেক ওপেনার হাবিবুর রহমান সোহান ঝড়ের আভাস দিয়ে আউট হয়ে যান (১৪ বলে ২৩)।
এরপর সাব্বির হোসেন (২৩ বলে ২০) ও মেহেরব হোসেন (২৯ বলে ৩১) রান করলেও দলের জন্য কার্যকর ইনিংস উপহার দিতে পারেননি।
অভিজ্ঞ সাব্বির রহমান ১২ বলে ১১ রান করে স্টাম্পে টেনে আনেন সুমন খানের বল। রাজশাহীর আর কোনো ব্যাটসম্যান দাঁড়াতেই পারেননি সেভাবে।
চার ম্যাচের স্রেফ একটি জিতে পয়েন্ট তালিকায় তলানি থেকে দুইয়ে রাজশাহী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা বিভাগ: ২০ ওভারে ১৫০/৯ (আশিকুর ২২, রায়ান ৩২, আরিফুল ১৩, মাহিদুল ৩৫, তাইবুর ৭, মোসাদ্দেক ৭, মাহফুজুর ০, শুভাগত ৭, সুমন ১৪*, রিপন ৫, নাজমুল অপু ১*; তাইজুল ৩-০-২৬-১, মেহেরব ৪-০-২০-১, নিহাদ ৩-০-৩৭-১, নাহিদ ৪-০-২৬-১, পায়েল ৪-০-২৮-২, সাব্বির হোসেন ২-০-৯-২ )।
রাজশাহী বিভাগ : ২০ ওভারে ১২২/৯ (শান্ত ৬, সোহান ২৩, সাব্বির হোসেন ২০, মেহরব ৩১, সাব্বির রহমান ১১, প্রিতম ৮, শাকিল ০, নিহাদ ১৩, তাইজুল ৫*, পয়েল ০, নাহিদ ০*; নাজমুল অপু ৪-১-১০-৩, মোসাদ্দেক ৪-০-২৫-১, মাহফুজুর ১-০-১৫-০, তাইবুর ৩-০-২৫-২, রিপন ৪-০-২৬-১, সুমন-৪-০-২১-২)
ফল: ঢাকা বিভাগ ২৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: সুমন খান।
আপনার মতামত লিখুন :