পাস্তা এখন আর শুধু ইতালির খাবার নয়, সারা পৃথিবীর মানুষই এটি ভালোবেসে খায়।
তবে বাজারে গেলে প্রশ্ন আসে—এত রকম শুকনা পাস্তার মধ্যে কোনটি সেরা? কোনটি কিনলে খাবারের স্বাদ ও মান বজায় থাকবে?
ইতালির সিসিলি দ্বীপে জন্ম নেওয়া শেফ এবং নিউ ইয়র্ক’য়ের ‘পিকোলা কুচিনা’ রেস্তোরাঁর কর্ণধার ফিলিপ গুয়ারদিওনে’র মতে, “ভালো পাস্তার আসল রহস্য লুকিয়ে থাকে এর বিভিন্ন উপাদানে, বিশেষ করে ময়দাতে।”
সেরা পাস্তা মানে কী?
বিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই ফিলিপ বলেন, “ভালো পাস্তা মানেই ভালো ময়দা। কেনার সময় সবসময় উপাদান দেখে নিন। মানসম্মত সেমোলিনা (ডুরাম গমের ময়দা) ব্যবহার করা হয়েছে কিনা, সেটাই আসল বিষয়।”
তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “একটি মানসম্মত শুকনা পাস্তা তৈরি হওয়ার জন্য দুইটি উপাদানই যথেষ্ট। যার একটি ডুরাম গমের সেমোলিনা আর পানি।”
এর বাইরে যদি উপকরণের তালিকায় অচেনা কোনো রাসায়নিক বা সংযোজনী থাকে, তাহলে সেটি এড়িয়ে চলাই ভালো।
যে কারণে সেমোলিনা জরুরি
ডুরাম গম থেকে তৈরি সেমোলিনা আসলে পাস্তার প্রাণ। এটি শুধু পাস্তার স্বাদকেই সমৃদ্ধ করে না, বরং সঠিকভাবে সেদ্ধ হওয়ার পরও পাস্তা যেন আঠালো বা অতিরিক্ত নরম না হয়ে যায়, তা নিশ্চিত করে। ফলে খেতে যেমন ভালো লাগে, তেমনি রেস্তোরাঁ মানের গুণগত মানও পাওয়া যায়।
শেফ ফিলিপের মতে, “সেমোলিনার মান খারাপ হলে পাস্তার আসল গঠন পাওয়া যায় না। বরং তা সেদ্ধ হয়ে গলে যায় বা শক্ত হয়ে যায়, যা খাবারের স্বাদ নষ্ট করে।”
শুকনা পাস্তা কেন জনপ্রিয়?
তাজা পাস্তার স্বাদে আলাদা আবেদন থাকলেও হোটেল বা রেস্তোরাঁতে কেউ সেটা বানায় না। তাই শুকনা, প্যাকেটজাত পাস্তার ওপরেই নির্ভর করা হয়। কারণ—
বাজার থেকে পাস্তা কেনার সময় যা দেখা উচিত
শুকনা পাস্তা কিনতে গেলে অনেক সময় রঙিন মোড়ক, বড় ব্র্যান্ড বা বিজ্ঞাপন দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে শেফ ফিলিপ গুয়ারদিওনের মতে, “সঠিকভাবে কিনতে হলে কয়েকটি বিষয়ে অবশ্যই নজর দিতে হবে।”
উপাদান পড়া
উপকরণের তালিকায় শুধু দুইটি নাম থাকা উচিত— ডুরাম গমের সেমোলিনা এবং পানি।
অতিরিক্ত কিছু আছে কি না দেখা
কৃত্রিম রং, প্রিজারভেটিভ বা অন্য কোনো সংযোজন থাকলে সেটি এড়িয়ে চলতে হবে।
গমের মান
যত ভালো মানের ডুরাম গম ব্যবহার করা হবে, ততই রান্নার পর পাস্তার স্বাদ ও গঠন উন্নত হবে।
আকৃতি ও নকশা
পাস্তার আকার ও ফাঁকফোকরও গুরুত্বপূর্ণ। যেসব পাস্তার গায়ে খানিকটা খসখসে বা রুক্ষতা থাকে, তাতে সস ভালোভাবে লেগে থাকে। ফলে স্বাদ বাড়ে।
রান্নার সময় যেসব নিয়ম মানতে হয়
পাস্তা কেনার পর সেটি কীভাবে রান্না করা হচ্ছে, সেটিও সমান গুরুত্বপূর্ণ। শেফ ফিলিপ গুয়ারদিওনে এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন।
পানি প্রচুর পরিমাণে: কম পানিতে পাস্তা রান্না করলে সেদ্ধ হওয়ার সময় আঠালো হয়ে যেতে পারে।
পানি ফোটানো পর্যন্ত অপেক্ষা: কেবলমাত্র পানি যখন টগবগ করে ফুটবে, তখনই পাস্তা ছাড়তে হবে।
লবণ দিন উদারভাবে: পানি যেন সমুদ্রের মতো নোনতা হয়। এতে পাস্তার আসল স্বাদ ফুটে উঠবে।
বারবার নেড়ে দেওয়া: রান্নার সময় মাঝে মাঝে নেড়ে দিলে পাস্তা হাঁড়ির তলায় লেগে যাবে না।
এই নিয়মগুলো যে জন্য গুরুত্বপূর্ণ
অনেকেই মনে করেন, যেভাবেই হোক শুকনা পাস্তা রান্না করলে একই স্বাদ পাওয়া যাবে। তবে বাস্তবে উপাদানের মান এবং রান্নার পদ্ধতি ঠিক না হলে পাস্তার স্বাদ একেবারেই ভিন্ন হয়ে যায়।
শেফ ফিলিপ গুয়ারদিওনের মতে, “পাস্তা রান্না এক ধরনের শিল্প। সঠিক ময়দা, সঠিক পানি এবং সঠিক তাপমাত্রা—সব মিলেই এটি তৈরি হয়।”
আরও পড়ুন
আপনার মতামত লিখুন :