
বিপিএল আসে, বিপিএল যায়। রয়ে যায় বিতর্ক, বয়ে যায় সন্দেহ-সংশয়ের স্রোত। ব্যবস্থা নেওয়া হয় কম সময়ই। অবশেষে এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে বিসিবি। গত বিপিএলে অনিয়ম-দুর্নীতির নানা অভিযোগ অভিযুক্ত ক্রিকেটার, কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টদের কাছে বিশেষ চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড, যেখানে তাদেরকে সামনের মৌসুমে সম্পৃক্ত না হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হবে।
এবারের ড্রাফটের আগেই বিসিবির দুর্নীতি দমন পরামর্শক এবং আইসিসির সাবেক দুর্নীতি দমন ইউনিট প্রধান অ্যালেক্স মার্শাল এই চিঠিগুলো ইস্যু করবেন। ড্রাফটের সম্ভাব্য তারিখ ১৭ নভেম্বর।
২০২৪ বিপিএলে অভিযোগিত অনিয়ম তদন্তে গঠিত স্বাধীন অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান বিসিবির সহ-সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য শাখাওয়াত হোসেন।
“এটি ১৫ নভেম্বরের মধ্যে হবে। আমরা যে প্রতিবেদন পেয়েছি তা অ্যালেক্স মার্শালের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরপর অভিযোগের গুরুত্বের ভিত্তিতে তিনি চার্জশিট তৈরি করবেন। তিনি মূলত সরাসরি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন। চিঠিগুলো মার্শাল নিজেই পাঠাবেন এবং তদন্তাধীনদের টুর্নামেন্ট থেকে বিরত রাখা নিশ্চিতে বিসিবি ব্যবস্থা নেবে। চিঠি মানে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করবেন। এছাড়া, যাদের নামে অভিযোগ আছে তাদের বিপিএলে অংশ নিতে না দেওয়ার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত করব।’’
‘‘প্রত্যেক ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ কতটা শক্তিশালী, তার ওপর অ্যকশন নির্ভর করবে। মূলত অভিযোগের মাত্রার ওপরই এটি নির্ভর করবে। কিছু অভিযোগ থাকতে পারে যা শুধু সন্দেহমাত্র। কারও বিরুদ্ধে সন্দেহ, প্রমাণ, এমনকি আনুষ্ঠানিক চার্জ ফ্রেমসহ অভিযোগ থাকতে পারে। সবকিছুই নির্ভর করবে অভিযোগের গুরুত্ব এবং আইসিসির পক্ষ থেকে অ্যালেক্স মার্শাল কীভাবে তা দেখেন, তার ওপর।’’
বিপিএল মৌসুমে ফ্র্যাঞ্চাইজি বাছাই প্রক্রিয়াতেও এই ব্যাপারগুলো গুরুত্ব দিয়ে আইসিসির সহায়তা চেয়েছে বিসিবি, জানান শাখাওয়াত।
‘‘আর্থিক স্থিতিশীলতা ও সততার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা সংস্থার ছাড়পত্র হবে প্রধান মানদণ্ড। প্রথম মানদণ্ড আর্থিক স্থিতিশীলতা, তারপর সততা, আইনশৃঙ্খলা সংস্থার ছাড়পত্রও গুরুত্বপূর্ণ ছিল। যাদের শক্তিশালী টিম ম্যানেজমেন্ট কাঠামো এবং ক্রিকেটের সঙ্গে প্রকৃত সম্পর্ক আছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। আগের বিপিএলে অনিয়মে জড়িত প্রমাণিত যে কেউ সব ধরনের ক্রিকেট–সম্পর্কিত কার্যক্রম থেকে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হবেন‘’
‘‘অনুসন্ধানের ভিত্তিতে যদি কোনো ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ বা ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে তাদের কাউকেই স্টেডিয়ামে, মাঠে, এমনকি ক্রিকেটের আশেপাশেও থাকতে দেওয়া হবে না। ড্রাফটের আগেই বোর্ড এই প্রক্রিয়া শেষ করবে। ড্রাফটের আগে আমরা সবকিছু চূড়ান্ত করতে চাই। (সোমবারের) বোর্ড মিটিংয়ে আমি বিষয়টি উল্লেখ করেছি। আমরা অগ্রাধিকার ও অভিযোগের গুরুত্ব অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। এই বিষয়ে পূর্ণ সহযোগিতা চেয়েছেন অ্যালেক্স মার্শাল।”
বিসিবির নতুন এই পরিচালকের প্রতিশ্রুতি, এবার বিতর্কমুক্ত বিপিএল তারা উপহার দেবেন।
“আপনারা এবার ভিন্ন রকম বিপিএল দেখতে পাবেন আশা করছি। কাউকে কাউকে চেনেন, আগে দেখেছেন, এমন অনেককে মাঠে দেখবেন না। দলেও তাদের জায়গা হবে না। আমরা চাই বিপিএল হোক পরিস্কার, পরিশুদ্ধ ও নিরাপদ, যেখানে খেলোয়াড় ও ম্যানেজমেন্টের যারা দায়িত্বশীল ও সহযোগী, শুধুমাত্র তারা থাকবেন।”
আপনার মতামত লিখুন :