
দিনের আলো মরে আসছিল ক্রমেই। মুশফিকুর রহিম এগিয়ে যাচ্ছিলেন শতরানের দিকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এ দিনের মতো তাকে থামতেই হলো, অনেকটাই যে কমে গেল আলো। দিনশেষে তিনি অপরাজিত রইলেন ৯৩ রানে।
সিলেটে এই ম্যাচের তিন দিনে শেষ হয়নি দুই ইনিংসও। কিন্তু মিরপুরে তিন দিনেই ম্যাচ শেষ। মেহেদী হাসান মিরাজ, সৌম্য সরকারদের খুলনাকে ৭ উইকেটে হারায় নাজমুল হোসেন শান্তর রাজশাহী।
সেঞ্চুরির অপেক্ষায় মুশফিক
প্রথম ইনিংসে ঢাকা বিভাগের ৩১০ রানে জবাবে ধীরস্থির ব্যাটিংয়ে সিলেটের রান ৭ উইকেটে ২৬০।
বিনা উইকেটে ৩৩ রান দিয়ে দিনের খেলা শুরু করে সিলেট। বাংলাদেশ টেস্ট দলে জায়গা ফিরে পাওয়ার প্রত্যাশী জাকির হাসান আউট দাবিটা জানাতে পারেননি শক্তভাবে। আউট হয়ে যান তিনি ৪৩ রানে। আগের রাউন্ডে ক্যারিয়ার সেরা ১৭৫ রানের ইনিংস খেলা সৈকত আলি এবার করতে পারেন কেবল ২৭।
এরপর আরও তিন উইকেটের পতন হয় অল্প সময়ের মধ্যে। বিনা উইকেটে ৭১ রানে থাকা সিলেট পরবর্তী ৪৭ রানের মধ্যে হারায় ৫ উইকেট।
দলকে উদ্ধারের ভার তুলে নেন তখন মুশফিক। তাকে কিছুটা সঙ্গ দেন শাহানুর রহমান। ৯৪ রানের জুটি গড়েন দুজন।
শাহানুর ৩০ রানে ফেরার পর ২৭ রানের ইনিংস খেলে আউট হন তোফায়েল।
মুশফিক এক প্রান্তে অটল রয়ে যান। আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হওয়ার সময় শতরান থেকে সাত রান দূরে থাকেন তিনি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩১০
সিলেট বিভাগ ১ম ইনিংস: ৯১.৪ ওভারে ২৬০/৭ (আগের দিন ৩৩/০) (সৈকত ২৭, জাকির ৪৩, সায়েম ১২, অমিত ৩, মুশফিত ৯৩*, গালিব ১৫, শাহানুর ৩০, তোফায়েল ২৭, ইবাদ ৫*, রিপন ১৭-১-৪৮-২, সুমন ১৭-৩-৫৫-০, নাজমুল অপু ৩১-৬-৭৩-২, এনামুল ১৪.৪-৪-৪৩-২, তাইবুর ৭-৩-২২-০, আনিসুল ৪-০-১৬-০)
রাজশাহীর জয়
আগের দিন বিকেলে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত দিলেও সেই লড়াই ধরে রাখতে পারেনি খুলনা বিভাগ। তাদেরকে ৭ উইকেটে হারায় রাজশাহী বিভাগ।
আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বেশিদূর এগোতে পারেননি এ দিন। ২৭ রানে দিন শুরু করে ৩৪ রানেই আউট হন এনামুল হক। বাংলাদেশের সবশেষ টেস্ট সিরিজে দুটি ম্যাচই খেলা ব্যাটসম্যান এবার জাতীয় লিগে দুই ম্যাচের চার ইনিংসে ফিফটি করতে পারলেন না।
অমিত মজুমদার ফেরেন ৩২ রানে। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন রানের খাতাই খুলতে পারেননি।
এরপর মেহেদী হাসান মিরাজ ও জিয়াউর কিছুটা লড়াই করেন। দারুণ কয়েকটি শট খেলে বড় কিছুর সম্ভাবনা জাগালেও শেষ পর্যন্ত ফিফটি করতে পারেননি মিরাজ। ৪টি চার ও ২ ছক্কায় ৪৮ করে ফেরেন তিনি। জিয়াউর বিদায় নেন ৩২ রানে।
এরপর অনেকটা সময় এক প্রান্ত আগলে রেখে ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন ইয়াসিন মুনতাসির। খুলনার ইনিংস শেষ হয় ২৫৫ রানে।
১০৯ রানের জয়ের লক্ষ্যে দ্রুত ছুটে যান হাবিবুর রহমান সোহান ও সাব্বির হোসেন। শুরুর জুটিতে ই ৭৩ তুলে ফেলেন দুজন।
৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৬২ রানে আউট হন সোহান, ২৫ রানে ফেরেন সাব্বির হোসেন। এরপ প্রিতম কুমারও ফেরেন দ্রুত। তবে রাজশাহীর জয়ও আসতে সময় লাগেনি। চার ও ছক্কায় ম্যাচ শেষ করে দেন সাব্বির রহমান।
আগের ম্যাচে হেরে যাওয়া রাজশাহীর এটি প্রথম জয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা বিভাগ ১ম ইনিংস: ১২১।
রাজশাহী বিভাগ ১ম ইনিংস: ২৬৮
খুলনা বিভাগ ২য় ইনিংস: ৮৭.৫ ওভারে ২৫৫ (আগের দিন ৬৮/১) (অমিত ৩২, সৌম্য ১০, এনামুল ৩৪, শাহরিয়ার ১৭, মিঠুন ০, মিরাজ ৪৮, জিয়াউর ৩২, মুনতাসির ৩২*, নাহিদুল ১১, মৃত্যুঞ্জয় ১২, হালিম ৩; নাহিদ রানা ১৬-২-৭১-৩, মেহেরব ১৮-৫-৩৬-২, সানজামুল ২৮.৫-২-৪৭-২, নিহাদ ১৪-২-৪০-০, ওয়ালিদ ১০-৪-২৯-৩, শান্ত ১-০-৯-০)।
রাজশাহী বিভাগ ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ১০৯) ২৩.৩ ওভারে ১১৪/৩ (সোহান ৬২, সাব্বির হোসেন ২৫, প্রিতম ৯, মেহেরব ৪*, সাব্বির রহমান ১২*; মিরাজ ৪-০-২৪-০, হালিম ৫-০-২০-০, মৃত্যুঞ্জয় ২-০-৮-০, মুনতাসির ৬-০-৩৫-২, নাহিদুল ৬.৫-২-২৭-১)।
ফল: রাজশাহী বিভাগ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: এসএম মেহরব হোসেন।
সারা দিনে ১১ ওভার
কক্সবাজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃষ্টি ও ভেজা মাঠের কারণে সারা দিনে খেলা হতে পারে স্রেফ ১১ ওভার। ২ উইকেটে ১১৫ রান নিয়ে শুরু করে বরিশাল বিভাগ আর কোনো উইকেট না হারিয়ে করে ১৬৬।
এক প্রান্ত আগলে রেখে ৩২ রানে অপরাজিত রয়ে যান জাহিদউজ্জামান। ৪৭ রানে শুরু করা সালমান হোসেন অপরাজিত থাকেন ৭৫ রানে।
আগের দিন চট্টগ্রাম বিভাগ তোলে ৩৫৮ রান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম বিভাগ ১ম ইনিংস: ৩৫৮
বরিশাল বিভাগ ১ম ইনিংস: ৫৫ ওভারে ১৬৬/২ (জাহিদ ৩২*, সালমান ৭৫*; হাসান ১৩-২-৪৩-০, আশিক ১০-২-৩৬-১, মুরাদ ১১-৩-৩৩-০, নাঈম ১৫-৪-২৬-১, আশরাফুল ৫-১-১৪-০, জয় ১-০-৫-০)।
বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া দিন
কক্সবাজারের এক মাঠে তবু কিছুটা হলেও খেলা হয়েছে, কিন্তু আরেক মাঠে হতে পারেনি একটি বলও। রংপুর বিভাগের বিপক্ষে দারুণ অবস্থানে থাকা ময়মনসিংহ বিভাগের দিনটি কেটেছে তাই হতাশায়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ময়মনসিংহ বিভাগ ১ম ইনিংস: ৫৫৬/৬ (ডি.)
রংপুর বিভাগ ১ম ইনিংস: ১৮/২
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                                    
                        
                        
                        
                        
                        
                        
                        
আপনার মতামত লিখুন :