
বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বাইরে লেংথ ডেলিভারি। তবে আগেই স্কুপ করার পজিশনে চলে গিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। ব্যাটে-বলে করতেও পারলেন দারুণভাবে। কিপারের ওপর দিয়ে বল ছুটে গেল বাউন্ডারি। সেদিকে এক ঝলক দেখেই বোলার এনামুল হকের দিকে তাকালেন মুশফিক। হুঙ্কার ছুড়লেন মুষ্ঠিবদ্ধ হাত বোলারের দিকে দেখিয়ে। আগুনে দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়েও রইলেন বোলাদের দিকে। এরপর উঁচিয়ে ধরলেন ব্যাট ও হেলমেট।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুশফিকের নানারকম উদযাপন নানা সময়েই দেখা গেছে। এবার জাতীয় লিগে দেখা গেল তার এমন উদযাপন। ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে সিলেট বিভাগের হয়ে সেঞ্চুরি করেন তিনি মঙ্গলবার সকালে।
সামনেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের টেস্ট সিরিজ। সব ঠিকঠাক থাকলে সেই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ দিয়ে বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্টের অবিস্মরণীয় মাইলফলক তিনি স্পর্শ করবেন। টেস্টের লড়াইয়ের জন্য তার প্রস্তুতিটা দারুণ হলো এই সেঞ্চুরি দিয়ে।
সেঞ্চুরির থেকে সাত রানের দূরত্বে দিনটি শুরু করেন মুশফিক। দলের উইকেট বাকি তখনও তিনটি। বেশ নির্ভারই থাকার কথা তার। কিন্তু এই পথ পেরোতেই কঠিন চ্যালেঞ্জে পড়তে হয় তাকে অন্য প্রান্তে সহায়তা না পেয়ে।
দিনের দ্বিতীয় ওভারেই আউট হয়ে যান ইবাদত হোসেন চৌধুরি। এক ওভার পরেই আউট দশে নামা সৈয়দ খালেদ আহমেদও। মুশফিক তখন অপরাজিত ৯৬ রানে, আরেক প্রান্তে শেষ ব্যাটসম্যান!
তবে ওভারের শেষ বলটি ভালোভাবেই সামলে নেন শেষ ব্যাটসম্যান নাবিল সামাদ। পাঁচ উইকেট নেওয়ার সম্ভাবনায় থাকা রিপন মন্ডল রাউন্ড দা উইকেটে এসে বাউন্সার করেন বাঁহাতি নাবিলকে। তবে তিনি তা ছেড়ে দিতে পারেন ভালোভাবেই।
পেসার এনামুলের করা পরের ওভারের প্রথম বলটি ডিফেন্স করেন মুশফিক। পরের বলেই স্কুপ শটে ওই বাউন্ডারি ও উদযাপন।
আগের দিন মুশফিককে বেশ কয়েকটি বাউন্সার করেছিলেন এনামুল, একটি লেগেছিল হেলমেটেও। তার উদযাপনে মিশে থাকতে পারে সেটির জবাব।
ওই ওভারের শেষ বলে একটু লাফিয়ে কাট করে তিনি বাউন্ডারি মারেন আরেকটি।
রিপনের করা পরের ওভারটি নির্বিঘ্নে কাটিয়ে দেন শেষ ব্যাটসম্যান নাবিল। এরপর এনামুলের ওভারে আবার দুটি বাউন্ডারি মারেন মুশফিক।
শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানের বিদায়েই শেষ হয় ইনিংস। ৮ চার ও ২ ছক্কায় ২০৫ বলে ১১৫ রানে বোল্ড হন তিনি তাইবুর রহমানের বাঁহাতি স্পিনে।
তার বিদায়ে সিলেটের ইনিংস শেষ হয় ২৯০ রানে। ২০ রানের লিড পায় ঢাকা।
বগুড়ার সন্তান মুশফিক এমনিতে বরাবরই খেলে থাকেন রাজশাহীর হয়ে। তবে এবার তিনি খেলছেন সিলেটের হয়ে।
৩৮ বছর বয়সী ব্যাটসম্যানের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটি ১৯তম সেঞ্চুরি। এর ১২টি করেছেন তিনি টেস্ট ক্রিকেটে।
আপনার মতামত লিখুন :