
নিউ জিল্যান্ড-ইংল্যান্ড
ফের বল হাতে আলো ছড়ালেন ব্লেয়ার টিকনার। চমৎকার বোলিং করলেন জ্যাকব ডাফি ও জ্যাকারি ফোকস। নিউ জিল্যান্ডের সামনে আরও একবার মুখ থুবড়ে পড়ল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। তাদেরকে অল্পতে আটকে দারুণ জয়ে দীর্ঘ চার দশকের বেশি সময়ের অপেক্ষার অবসান করল কিউইরা।
ওয়েলিংটনে শনিবার তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ২ উইকেটে জিতেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রতিপক্ষের ২২২ রান ৩২ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে গেছে তারা।
৪২ বছর পর ইংল্যান্ডকে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করতে পারল নিউ জিল্যান্ড। এর আগে কেবল ১৯৮৩ সালেই ইংলিশদের বিপক্ষে সিরিজের সবগুলো ম্যাচ জিতেছিল তারা।
এবারের সিরিজ জুড়েই ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগেছে ইংল্যান্ড। তিন ম্যাচেই আগে ব্যাটিং করা দল আড়াইশ করতে পারেনি একবারও। প্রথম দুই ম্যাচে তাদেরকে ৪ ও ৫ উইকেটে হারিয়েছিল স্বাগতিকরা।
আগের ম্যাচের মতো এদিনও কিউইদের জয়ের নায়ক টিকনার। গত জয়ে ৪ শিকার ধরা পেসার এই ম্যাচেও নিলেন চারটি। প্রায় আড়াই বছর পর এই সিরিজ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরে টানা দুই ম্যাচে সেরার পুরস্কার জিতলেন তিনি।
শুরুতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে ধস নামিয়ে ৫৬ রানে ৩টি উইকেট নেন ডাফি। আরেক পেসার ফোকসের প্রাপ্তি ২৭ রান খরচায় দুটি।
দুই ফিফটিতে সর্বোচ্চ ১৭৮ রান করা ড্যারিল মিচেল জিতে নেন সিরিজ সেরার পুরস্কার।
স্কাই স্টেডিয়ামে টস জিতে ইংলিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে ৪৪ রানে ৫ উইকেট তুলে নেয় নিউ জিল্যান্ড। ডাফি ও ফোকসের ছোবলে সফরকারীদের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের চারজনই ছুঁতে পারেননি দুই অঙ্ক।
স্যাম ও জস বাটলারের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা চালায় ইংল্যান্ড। পরপর দুই ওভারে দুইজনকেই বোল্ড করে দেন টিকনার। এরপর ব্রাইডন কার্স ও জেমি ওভারটনের ৫৮ রানের জুটিতে দেড়শ ছাড়ায় দলটির রান।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ৪টি ছক্কা ও ১ চারে ৩০ বলে ৩৬ রান করা কার্সকে থামান টিকনার। জফ্রা আর্চারও তার শিকার। আদিল রাশিদকে নিয়ে দলের রান দুইশ পার করেন ৫০ বলে ফিফটি করা ওভারটন।
২ ছক্কা ও ১০ চারে ৬২ বলে ৬৮ রান করে স্যান্টনারের বলে ওভারটনের বিদায়ে শেষ হয় ইংলিশদের ইনিংস।
রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ডকে ৭৮ রানের উদ্বোধনী জুটি এনে দেন ডেভন কনওয়ে ও রাচিন রাভিন্দ্রা। ভালো শুরু পাওয়া দুই ব্যাটসম্যানের কেউই শেষ পর্যন্ত ফিফটি ছুঁতে পারেননি।
দুটি করে ছক্কা-চারে ৩৪ রান করা কনওয়ে কাটা পড়েন রান আউটে। পরের ওভারে রাভিন্দ্রার স্টাম্প ভেঙে দেন কারান। ৭ চারে ৩৭ বলে ৪৬ রান করেন রাভিন্দ্রা।
এরপর দ্রুত কয়েকটি উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। এক প্রান্ত ধরে রেখে অনেকটা সময় দলকে টানা মিচেল বিদায় নিলে বিপদ আরও বাড়ে তাদের। ১ ছক্কা ও ৪টি চারে ৪৪ রান করেন মিচেল।
অষ্টম উইকেট হিসেবে মিচেল যখন ফেরেন, তখনও জয় থেকে ২৭ রান দূরে কিউইরা। দারুণ ব্যাটিংয়ে অবিচ্ছিন্ন থেকে দলকে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে দেন ফোকস ও টিকনার। ১৪ রান করেন ফোকস, ১৮ রান আসে টিকনারের ব্যাট থেকে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৪০.২ ওভারে ২২২ (স্মিথ ৫, ডাকেট ৮, রুট ২, ব্রুক ৬, বেথেল ১১, বাটলার ৩৮, কারান ১৭, ওভারটন ৬৮, কার্স ৩৬, আর্চার ১৬, রাশিদ ১*; ডাফি ১০-০-৫৬-৩, ফোকস ৮-১-২৭-২, স্মিথ ৬-০-৪০-০, টিকনার ১০-০-৬৪-৪, স্যান্টনার ৬.২-০-৩৪-১)
নিউ জিল্যান্ড: ৪৪.৪ ওভারে ২২৬/৪ (কনওয়ে ৩৪, রাভিন্দ্রা ৪৬, ইয়াং ১, মিচেল ৪৪, ল্যাথাম ১০, ব্রেসওয়েল ১৩, স্যান্টনার ২৭, স্মিথ ২, ফোকস ১৪*, টিকনার ১৮*; আর্চার ১০-২-৫৩-০, কার্স ১০-০-৬০-১, ওভারটন ১০-১-৩২-২, কারান ৮.৪-১-৪৬-২, রাশিদ ৬-০-৩২-১)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ২ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্লেয়ার টিকনার
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ৩-০তে জয়ী কিউইরা
ম্যান অব দা সিরিজ: ড্যারিল মিচেল
আপনার মতামত লিখুন :