
বেশ কিছুদিন ধরে আলোচনা ও টানাপোড়েনের পর অবশেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেললেন কেন উইলিয়ামসন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরের ঘোষণা দিলেন নিউ জিল্যান্ডের অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কেন্দ্রীয় চুক্তিতে না থাকা ৩৫ বছর বয়সী ক্রিকেটার অবশ্য টেস্ট ও ওয়ানডে খেলে যাবেন।
এমনিতে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নেতৃত্ব দেওয়ার পর এই দেড় বছরে নিউ জিল্যান্ডের হয়ে কোনো টি-টোয়েন্টি খেলেননি তিনি। নেতৃত্বও ছেড়েছেন বেশ আগেই। তরুণ ও আগ্রাসী বেশ কজন ব্যাটসম্যানের উত্থানে তার জায়গাও ছিল চ্যালেঞ্জের মুখে। তার পরও তিনি খেলা চালিয়ে গেলে আগামী ফেব্রুয়ারিতে উপমহাদেশের বিশ্বকাপে তার অভিজ্ঞতা নিশ্চিতভাবেই কাজে লাগাত নিউ জিল্যান্ড।

বিশ্বকাপে তাকিয়েই গত কয়েক মাসে তাকে টি-টোয়েন্টি দলে রাখতে চাইছিল দল। কিন্তু জুলাইয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে না যাওয়ার পর গত মাসে দেশের মাঠে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও তিনি খেলেননি চোট ও ব্যক্তিগত কারণ মিলিয়ে। তাকে নিয়ে তাই অনিশ্চয়তার মেঘ জমা হয়েছিল বেশ। অবসরের সিদ্ধান্তে এবার সবকিছুর অবসান।
শুধু সাম্প্রতিক মাসগুলোতেই নয়, নিউ জিল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেছে বেছে খেলেন তিনি অনেক দিন ধরেই। এজন্যই প্রায় ১৩ বছরের ক্যারিয়ারে খেলেছেন কেবল ৯৩টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি। খুব আগ্রাসী ব্যাটসম্যান না হলেও এই সংস্করণে কার্যকর হওয়ার পথ তিনি বের করে নিয়েছিলেন। ১৮টি ফিফটিতে রান করেছেন ২ হাজার ৫৭৫, কিউইদের হয়ে যা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ব্যাটিং গড় ৩৩.৩৩, স্ট্রাইক রেট ১২৩.০৮। সেরা ইনিংস ৯৫ রানের।
নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড ৭৫ ম্যাচে তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেখানে জয় ৩৯টি। তার নেতৃত্বে ২০২১ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে দল, সেমি-ফাইনালে খেলেছে ২০১৬ ও ২০২২ বিশ্বকাপে।
তিনি দায়িত্ব ছাড়ার পর সীমিত ওভারের দুই সংস্করণেই দেশকে দারুণভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মিচেল স্যান্টনার।
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউ জিল্যান্ডকে এগিয়ে নিতে স্যান্টনার ও তার দলকে প্রস্তুত বলেই মনে করেন উইলিয়ামসন। নিজের বিদায়ের সময়টাকেও তার মনে হয়েছে উপযুক্ত।
“মিচ (স্যান্টনার) দারুণ এক অধিনায়ক ও নেতা। দলটাকে নিয়ে সত্যিই সে আপন রূপে আবির্ভুত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে খেলে এই খেলা ও এই সংস্করণ নিয়ে তার বোধ দুর্দান্ত এবং এখনও পর্যন্ত অসাধারণ করেছে। এখন সে দায়িত্ব পেয়েছে ও দারুণ রোমাঞ্চিত সে। তাকে দেখতে মুখিয়ে আছি আমি। এই সংস্করণে ব্ল্যাকক্যাপদের সামনে এগিয়ে নেওয়ার সময় এখন তাদের, আমি সমর্থন জানাব দূর থেকে।”
“এটা (টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট) এমন কিছু, দীর্ঘদিন যেটির অংশ হতে পেরে আমার ভালো লেগেছে এবং এত স্মৃতি ও অভিজ্ঞতার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার জন্য ও দলের জন্য সঠিক সময় এটিই (বিদায়ের)। এটি দলকে স্বচ্ছতা দেবে সামনে এগিয়ে চলার পথে ও পরবর্তী বড় আসর বিশ্বকাপের আগে।”
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ছাড়লেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট চালিয়ে যাবেন উইলিয়ামসন। সবশেষ তাকে দেখা গেছে ইংল্যান্ডের দা হান্ড্রেড ও টি-টোয়েন্টি ব্লাস্টে মিডলসেক্সের হয়ে।
আপনার মতামত লিখুন :