
প্রতিপক্ষ, পরিস্থিতি বা প্রেক্ষাপট যেমনই হোক না কেন, হ্যাটট্রিক মানে সবসময়ই বিশেষ কিছু। হ্যাটট্রিকের উদযাপনও তাই সেরকমই হয়ে থাকে সাধারণত। কিন্তু রোমারিও শেফার্ডের উদযাপনে বিশেষ কিছু দেখা গেল না। কারণটা বোঝা গেল ম্যাচের পর। ক্যারিবিয়ান এই অলরাউন্ডার যে শুরুতে বুঝতেই পারেননি, হ্যাটট্রিক করে ফেলেছেন!
বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে চট্টগ্রামে শুক্রবার এই হ্যাটট্রিক করেন শেফার্ড। তবে তার বুঝতে না পারার কারণ, টানা তিন বলে উইকেট নিলেও তা এক ওভারে ছিল না।
তার প্রথম উইকেট ছিল সপ্তদশ ওভারের শেষ বলে। লং অনে রভম্যান পাওয়েলের দারুণ ক্যাচে আউট হন নুরুল হাসান সোহান।
এরপর তার দুই ওভারের বিরতি। ১৮ ও ১৯তম ওভার করেন আকিল হোসেন ও জেসন হোল্ডার। সেই দুই ওভারে দুটি উইকেট পড়ে, দুটি চার হয়। নানা ঘটনা প্রবাহে হয়তো শেফার্ডের মাথায় ছিল না, নিজের সবশেষণ ডেলিভারিতে উইকেট নিয়েছিলেন।
শেষ ওভারে আবার আক্রমণে আসেন তিনি। প্রথম বলেই মিড অফে ক্যাচ দেন ৮৯ রান করা তানজিদ হাসান। পরের বলে ইয়র্কারে বোল্ড শরিফুল ইসলাম।
আউট করে তিনি স্বাভাবিকভাবেই হাঁটা দিচ্ছিলেন বোলিং মার্কের দিকে। যেটির মানে, হ্যাটট্রিক তিনি বুঝতেও পারেননি। পরে আলিক আথানেজ গিয়ে কিছু একটা বলেন তাকে, যোগ দেন অন্যরাও। তখন তার মুখে দেখা যায় চওড়া হাসি।
ম্যাচের পর শেফার্ড বললেন, হ্যাটট্রিক তার ভাবনাতেই ছিল না।
“নাহ, আমি বুঝতে পারিনি। পরে ওরা বলল আমি হ্যাটট্রিক করেছি। তখন মনে হলো যে, হ্যাটট্রিক হয়ে গেছে! তবে খুব বেশি উদযাপন করার চেষ্টা করিনি। কারণ, ওভারের চার বল তখনও বাকি ছিল। শেষটা ভালোভাবে করতে চেয়েছিলাম আমি।”
সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের শেষ ওভারে তানজিম হাসানের বলে তিনটি ছক্কাসহ ২২ রান নিয়েছিলেন রভম্যান পাওয়েল। ম্যাচের মোড় ঘুরে গিয়েছিল সেখানে। এবার শেফার্ডের চাওয়া ছিল, তার সঙ্গে যেন তেমন কিছু না হয়।
“আমরা চাইনি ম্যাচের পরের ভাগে যাওয়ার আগে ওরা মোমেন্টাম পেয়ে যাক। প্রথম ম্যাচে শেষ ওভারে আমরা অনেক রান করেছিলাম। তাতেই মোমেন্টাম আমাদের দিকে চলে আসে। আমি চাইনি, ওরা আজকে তেমন কিছু পেয়ে যাক। সেভাবেই শেষটা করতে পেরেছি।”
হ্যাটট্রিকের পর অবশ্য তাসকিন আহমেদের ব্যাটে একটি ছক্কা হজম করেন শেফার্ড। তার পরও শেষ ওভারে কেবল ৯ রান দেন তিনি। বাংলাদেশকে ১৫১ রানে আটকে রেখে ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতে নেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে এর আগে হ্যাটট্রিক ছিল কেবল জেসন হোল্ডারের। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে যেটি করেছিলেন তিনি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে।
এই সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরা হয়েছিলেন শেফার্ড। তিন ম্যাচ সাত উইকেট নিয়ে ম্যান অব দা সিরিজ তিনিই। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবার এই স্বীকৃতি পেলেন ৩০ বছর বয়সী অলরাউন্ডার।
আপনার মতামত লিখুন :