
বাংলাদেশ ম্যাচ হারলে অনেক সময়ই সংবাদ সম্মেলনে পরাজয়ের কারণ আর অজুহাতের ফর্দ লম্বা হয়। এবারও ব্যতিক্রম নয়। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হোয়াইটওয়াশড হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক লিটন কুমার দাসও দায় দিলেন শিশিরের
সিরিজ হার নিশ্চিত হয়েছিল প্রথম দুই ম্যাচেই। শুক্রবার শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ হেরে গেছে ৫ উইকেটে।
খালি চোখে দেখলে যে কেউই বলতে বাধ্য, বাংলাদেশ হেরে গেছে ব্যাটিং ব্যর্থতায়। ২০ ওভারে ১৫১ রানের পুঁজি যে যথেষ্টর চেয়ে অনেক কম, তা তো ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিংয়েই প্রমাণ হয়ে গেছে। তবে লিটনের ভাবনা ভিন্ন।
বাংলাদেশ অধিনায়কের মতে, রান তাদের কম ছিল না, কিন্তু দলের আশা ভেসে গেছে রাতের শিশিরে।
‘‘আপনি যদি দুইশর উইকেটে খেলেন, তাহলে ব্যাটসম্যানরা রান করবে। না করার কোনো কিছু নাই। দুইশর উইকেটে যদি ১৬০ করেন, তাহলে জিততে পারবেন না। তাই আপনি যদি আফগানিস্তান সিরিজের কথা বলেন, আমরা কত করেছি, ১৬০ তাড়া করেছি। আপনাকে যদি উইকেট চাহিদা দেখায় ১৬০ এর মতো। আপনার সব ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইকরেট তখন উচুতে থাকবে না। দুই-একজনের থাকবে হয়তো। আপনি যদি এখানেও চট্টগ্রামের কথা বলেন, প্রথম দুই ম্যাচে ছিল ১৬৫ ও ১৫০ রান। তখন দুই-একটা ব্যাটসম্যানের স্ট্রাইকরেট বেশি থাকবে। কিন্তু আজকে যে খেলাটা ছিল আমি মনে করি, সম্পূর্ণরুপে প্রথম ইনিংসটা আমাদের জন্য খুব দুর্ভাগ্য।’’
‘‘কিছু জিনিস আমাদের হাতে থাকে না। আবহাওয়া আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি না। শুধু উইকেট দেখে একটা ধারণা নেওয়া যায়। আমরা যেমন ভেবেছিলাম, তারাও তিনজন বাঁহাতি স্পিনার খেলিয়েছে। মানে তারাও টার্ন আশা করেছে, সেটাই হয়েছে। প্রথম দুই ম্যাচে তেমন শিশির ছিল না, আজ পুরোটা পড়েছে। আমরা যখন ব্যাট করেছি, উইকেট শুকনো ছিল, বল গ্রিপ করছিল ভালোমতো। তারা যখন ব্যাটিংয়ে আসে। তাদের পক্ষে চলে গিয়েছে সবকিছু। তাই কিছু কিছু জিনিস আছে আপনার নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।’’
বাংলাদেশের শুরুর ব্যাটার তানজিদ হাসান ৮৯ রানের ইনিংস খেলে শেষ ওভারের প্রথম বলে আউট হন। তার পরও কোনোরকমে দেড়শ ছাড়াতে পারে দল। অন্য কেউ যে জ্বলে উঠতেই পারেননি! সাইফ হাসান অনেকক্ষণ ক্রিজে থেকেও ২২ বল খেলে করতে পারেন কেবর ২৩ রান। বাকিরা ছিলেন কেবল আসা-যাওয়ার মিছিলে।
এরপর ফিল্ডিংয়েও ক্যাচ পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। শুরুতেই দুই দফায় জীবন পেয়েছেন আমির জাঙ্গু। বিধ্বংসী ফিফটি করা আকিম ওগিস জীবন পেয়েছেন ২৭ রানে।
তবু দলের পরাজয়ে নিজেদের ব্যর্থতার চেয়ে শিশিরের ভূমিকাই বেশি দেখছেন
‘‘আমাদের চেষ্টার কমতি ছিল না। আমাদের বোলাররা ভালো সামর্থ্য দেখিয়েছে। যেহেতু শিশির পড়েছে, উইকেট খুব ভালো হয়ে গেছে ব্যাটিংয়ের জন্য। প্রথম ইনিংসে যদি আমরা দুইশ রান করতাম… যেটা সম্ভব ছিলনা। এই উইকেটে আপনি ২০০ রান করতে পারবেন না। যেটুকু ছিল, আমার মনে হয় যথেষ্ট রান ছিল। কিন্তু যদি আউটফিল্ড শুকনো থাকত, তাহলে বলটা নরম হয়ে যেত। তখন উইকেটে ব্যাটিং করা একটু কঠিন হতো।”
“আসলে কিছু আমাদের নিয়য়ন্ত্রনের বাইরে। শিশিরের ব্যাপারটাও আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে গিয়েছে। শিশিরটা অনেক বড় প্রভাব হয়ে গিয়েছে।’’
আপনার মতামত লিখুন :