
ভেন্যু বদলের সঙ্গে পাকিস্তানের ভাগ্যও বদলাল। আগের ম্যাচে ব্যাটে-বলে বিধ্বস্ত দল এবার দুই বিভাগেই দেখাল দাপট। নতুন বলে দুর্দান্ত এক স্পেলে দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডারে চিড় ধরালেন সালমান মির্জা। মিডল অর্ডারে ছোবল দিলেন ফাহিম আশরাফ। ছোট লক্ষ্যে বিস্ফোরক ইনিংসে বাকিটা সারলেন সাইম আইয়ুব। দারুণ জয়ে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখল সালমান আলি আগার দল।
লাহোরে শুক্রবার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের জয় ৯ উইকেটে।
তিন ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা। একই মাঠে শনিবার শেষ ম্যাচে হবে সিরিজের ফয়সালা।
রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হারা পাকিস্তান এবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১১০ রানে অলআউট করে সেরে ফেলে অর্ধেক কাজ। ছোট লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে তারা ৪১ বল বাকি থাকতেই।
শাহিন শাহ আফ্রিদির জায়গায় সিরিজে প্রথমবার সুযোগ পেয়ে চার ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরা হন আরেক বাঁহাতি পেসার সালমান মির্জা। ৩১ বছর বয়সী ক্রিকেটারের ছয় ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং এটি।
২৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে দলের সফলতম বোলার অবশ্য পেস বোলিং অলরাউন্ডার ফাহিম, যাকে প্রথম ম্যাচে বোলিংই দেয়নি পাকিস্তান।
৫ ছক্কা ও ৬ চারে ৩৮ বলে অপরাজিত ৭১ রানের ইনিংসে দলের জয় নিয়ে ফেরেন সাইম। এই সংস্করণে ১১ ইনিংস পর পঞ্চাশ ছুঁতে পারলেন তিনি।
১০ মাস পর টি-টোয়েন্টিতে ফিরে আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়ার পর, এবার ১৮ বলে অপরাজিত ১১ রানের ইনিংসের পথে একটি বিশ্ব রেকর্ড গড়েন বাবর আজম। সাবেক ভারতীয় অধিনায়ক রোহিত শার্মাকে (৪ হাজার ২৩১) ছাড়িয়ে এই সংস্করণে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ড নিজের করে নিলেন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক (৪ হাজার ২৩৪)।
দক্ষিণ আফ্রিকার একজনও ছুঁতে পারেননি ত্রিশ। গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকে নিয়মিত উইকেট হারায় তারা।
ম্যাচের দ্বিতীয় বলে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে রিজা হেনড্রিকসকে বোল্ড করে দেন সালমান। পরের ওভারে নাসিম শাহর শিকার কুইন্টন ডি কক।
সালমান নিজের পরের দুই ওভারে বিদায় করেন টনি ডি জর্জি ও ম্যাথু ব্রিটসস্কিকে। পঞ্চম ওভারে ২৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
তিন ছক্কায় পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করেন ডেওয়াল্ড ব্রেভিস। তবে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। নিজের প্রথম ওভারে তাকে ফিরিয়েই প্রথম শিকার ধরেন ফাহিম। ব্রেভিসের ১৬ বলে ২৫ রানই দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ।
বাকিরা কেউ পারেননি দলকে উদ্ধার করতে। ফাহিম নিজের পরের দুই ওভারে উইকেট নেন আরও দুটি। শেষ ওভারে ওটনিয়েল বার্টমানকে আউট করে দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস গুটিয়ে দেন তিনিই।
লক্ষ্য তাড়ায় সাইম ও সাহিবজাদা ফারহানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৪৯ রান তোলে পাকিস্তান। পরের ওভারে বিদায় নেন সাহিবজাদা (২৩ বলে ২৮)।
কর্বিন বশের ওই ওভারে আগের বলটিতে আউট হতে পারতেন সাইম, কিন্তু সহজ ক্যাচ ফেলেন ব্রেভিস। ২৩ রানে জীবন পাওয়া ওপেনার ফিফটি করেন ২৯ বলে।
বাবর এদিন প্রথম বলেই চোখধাঁধানো কাভার ড্রাইভে চার মারেন বশকে। ৯ রানে পৌঁছে রোহিতের রেকর্ড ভেঙে দেন তিনি। ডনোভান ফেরেইরাকে ছক্কায় ম্যাচের ইতি টেনে দেন সাইম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
দক্ষিণ আফ্রিকা: ১৯.২ ওভারে ১১০ (হেনড্রিকস ০, ডি কক ৭, ডি জর্জি ৭, ব্রেভিস ২২২৫, ব্রিটস্কি ৫, ফেরেইরা ১৫, লিন্ডা ৯, বশ ১১, বার্গার ৯, বার্টমান ১২, এনগিডি ৭*; সালমান মির্জা ৪-০-১৪-৩, নাসিম ৪-০-২৮-২, মোহাম্মদ নাওয়াজ ৪-০-১৯-০, আবরার ৪-০-২৬-১, ফাহিম ৩.২-০-২৩-৪)
পাকিস্তান: ১৩.১ ওভারে ১১২/১ (সাহিবজাদা ২৮, সাইম ৭১*, বাবর ১১*; বার্গার ২-০-১৪-০, এনগিডি ২-০-১৪-০, বশ ২-০-১৭-১, বার্টমান ২-০-৩৪-০, ফেরেইরা ৩.১-০-২২-০, লিন্ডা ২-০-১১-০)
ফল: পাকিস্তান ৯ উইকেটে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে প্রথম দুটির পর ১-১ সমতা
ম্যান অব দা ম্যাচ: সালমান মির্জা
আপনার মতামত লিখুন :