
মন্থর ওভার রেটের জরিমানা থেকে ভারতকে বাঁচাতে তাকে চাপ দেওয়া হয়েছিল- আইসিসির সাবেক ম্যাচ রেফারি ক্রিস ব্রডের এমন দাবির সঙ্গে সুর মেলালেন সাবেক ভারতীয় কোচ গ্রেগ চ্যাপেল। সাবেক এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যানের দাবি, ভারতীয় দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর আইসিসি ও বিসিসিআইয়ের সাবেক প্রধান জগমোহন ডালমিয়া নাকি তাকে অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলির শাস্তি কমানোর ব্যবস্থা করতে বলেছিলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘দা টেলিগ্রাফ’-এ গত সোমবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারে ব্রড বলেন, ম্যাচ রেফারির দায়িত্ব পালনের সময় একবার একটি ফোন কল পান তিনি। তাকে ‘নমনীয় হতে এবং কিছু সময় বের করতে’ বলা হয়, যাতে মন্থর ওভার রেটের জন্য ভারতকে জরিমানা গুনতে না হয়।
“ম্যাচ শেষে ভারত তিন-চার ওভার পিছিয়ে ছিল (নির্ধারিত সময়ে), তাই তাদের জরিমানা হওয়ার কথা ছিল। আমাকে ফোন করে বলা হয়, ‘নমনীয় হন, কিছু সময় বের করুন, কারণ এটা ভারত।’ আমি ভাবলাম, ঠিক আছে। তারপর আমরা কোনোভাবে কিছু বাড়তি সময় বের করলাম, যেন ওভার রেট জরিমানার সীমার নিচে নিয়ে আসা যায়।”
“পরের ম্যাচেও একই ঘটনা ঘটে। সৌরভ গাঙ্গুলি তখন দ্রুত (ওভার শেষ করার) নির্দেশনা শোনেনি। আমি ফোন করে জিজ্ঞেস করি, ‘এখন আমাকে কী করতে বলেন?’ তখন আমাকে বলা হয়, ‘শুধু তাকে (জরিমানা) করুন।’ আসলে শুরু থেকেই রাজনীতি ছিল।”
কার কাছ থেকে ফোন কল পেয়েছিলেন, তা অবশ্য প্রকাশ করেননি সাবেক ইংলিশ পেসার স্টুয়ার্ট ব্রডের বাবা ক্রিস ব্রড।
২০০৫ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ভারতের কোচের দায়িত্ব পালন করা চ্যাপেল অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম ‘সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’কে বললেন, সৌরভের শাস্তি কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন ডালমিয়া।
“ডালমিয়া নিষেধাজ্ঞা কমানোর প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যাতে সে (সৌরভ) আমার মেয়াদের শুরুতে শ্রীলঙ্কা সফরে যেতে পারে। আমি বলেছিলাম, না, আমি সিস্টেমকে নষ্ট করতে চাই না। তাকে নিষেধাজ্ঞা কাটাতে হবে। ডালমিয়া সম্ভবত মেনে নিয়েছিলেন।”
২০০৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের তৃতীয় ওয়ানডেতে মন্থর ওভার রেটের জন্য সৌরভকে জরিমানা করেছিলেন ম্যাচ রেফারি ব্রড। সেই সিরিজে আবার একই অপরাধের জন্য সৌরভকে ছয় ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, আপিলের পর যা নেমে আসে চার ম্যাচে।
১২ মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার মন্থর ওভার রেটের কারণে সৌরভ দুই ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হওয়ার কিছুদিন আগে, ২০০৫ সালের মে মাসে চ্যাপেল ভারতের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। চ্যাপেলের সঙ্গে সৌরভের শীতল সম্পর্কের কথা মোটামুটি ক্রিকেট অনুরাগী সবারই জানা।
ডালমিয়া মারা যান ২০১৫ সালে। ১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত তিনি আইসিসির সভাপতি ও ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বোর্ড অব কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়ার (বিসিসিআই) সভাপতি ছিলেন। বিসিসিআই সভাপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তিনি বেশ কয়েক বছর বোর্ডের একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ছিলেন।
আপনার মতামত লিখুন :