
নিউ জিল্যান্ড-ইংল্যান্ড
প্রায় আড়াই বছর পর জাতীয় দলে ফেরার ম্যাচ ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে রাঙালেন ব্লেয়ার টিকনার। সঙ্গে তার সতীর্থরাও রাখলেন ভূমিকা। তাতে আরও একবার নিউ জিল্যান্ডের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল ইংল্যান্ডের ব্যাটিং। চমৎকার অলরাউন্ডার পারফরম্যান্সে এক যুগ পর ইংলিশদের ওয়ানডে সিরিজে হারাল কিউইরা।
হ্যামিল্টনে বুধবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নিউ জিল্যান্ডের জয় ৫ উইকেটে। ইংল্যান্ডকে ১৭৫ রানে গুটিয়ে ১০১ বল বাকি থাকতে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি ৪ উইকেটে জিতেছিল নিউ জিল্যান্ড।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সবশেষ ২০১৩ সালে দ্বি-পাক্ষিক ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল নিউ জিল্যান্ড। ঘরের মাঠে তারও আগে, সেই ২০০৮ সালে। লম্বা সময়ের অপেক্ষার অবসান হলো তাদের।
নিউ জিল্যান্ডের বোলিং করা সবাই পান উইকেটের স্বাদ। ৩৪ রান খরচায় সর্বোচ্চ ৪টি নেন ২০২৩ সালের মে মাসের পর প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে নামা টিকনার। ওয়ানডেতে এই পেসারের আগের সেরা ছিল ৫০ রানে ৪ উইকেট।
রান তাড়ায় ১ ছক্কা ও ৭টি চারে ৫৮ বলে ৫৪ রান করেন রাচিন রাভিন্দ্রা। দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফেরা ড্যারিল মিচেল করেন ২ ছক্কা ও ৬টি চারে ৫৯ বলে ৫৬। আগের ম্যাচে তিনি অপরাজিত ছিলেন ৭৮ রানে।
সেডন পার্কে এদিন বৃষ্টির বাধায় খেলা শুরু হয় দেরিতে। টস জিতে মেঘলা আকাশের নিচে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে চেপে ধরে নিউ জিল্যান্ড। তৃতীয় ওভারে বেন ডাকেটকে কট বিহাইন্ড করে দেন জ্যাকব ডাফি। পাওয়ার প্লের শেষ বলে জ্যাকারি ফোকসের শিকার জেমি স্মিথ।
দলকে টানতে পারেননি অভিজ্ঞ জো রুটও। তাকে কট বিহাইন্ড করে প্রথম শিকার ধরেন টিকনার। জ্যাকব বেথেলকে টিকতে দেননি ন্যাথান স্মিথ। তিনিই পরে এলবিডব্লিউ করে দেন জস বাটলারকে।
আগের ম্যাচেও ব্যাটিং ধসে পড়েছিল ইংল্যান্ড। সেদিন ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে অসাধারণ সেঞ্চুরি করা হ্যারি ব্রুক এবার আর পারেননি দলের হাল ধরতে। মিচেল স্যান্টনারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১ ছক্কা ও ৩টি চারে ৩৪ রান করে।
মূলত জেমি ওভারটনের ঝড়ো ইনিংসে ১৭০ পার করতে পারে ইংল্যান্ড। ২ ছক্কা ও ৪টি চারে ২৮ বলে দলের সর্বোচ্চ ৪২ রান করেন তিনি।
লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই ধাক্কা খায় নিউ জিল্যান্ড। ইনিংসের চতুর্থ বলে উইল ইয়াংকে এলবিডব্লিউ করে দেন জফ্রা আর্চার। দীর্ঘদিন বাদে প্রথম ওয়ানডে দিয়ে ফেরার দিনে রানের খাতা খুলতে না পারা কেন উইলিয়ামসন এদিন ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু তাকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি ওভারটন। ৩ চারে ২১ রান করে বোল্ড হন উইলিয়ামসন।
আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে রানের চাকায় দম দেন রাভিন্দ্রা ও মিচেল। ৫২ বলে ফিফটি করে আর্চারের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রাভিন্দ্রা। দ্রুত টম ল্যাথাম ও মাইকেল ব্রেসওয়েলকেও হারিয়ে ফেলে কিউইরা।
এরপর, অবিচ্ছিন্ন ৫৯ রানের জুটিতে বাকি পথ পাড়ি দেন মিচেল ও স্যান্টনার। ৩ ছক্কা ও দুটি চারে ১৭ বলে ৩৪ রানের বিস্ফোরক ইনিংস খেলেন স্যান্টনার।
ওয়েলিংটনে তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে আগামী শনিবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৩৬ ওভারে ১৭৫ (স্মিথ ১৩, ডাকেট ১, রুট ২৫, বেথেল ১৮, ব্রুক ৩৪, বাটলার ৯, কারান ১৭, ওভারটন ৪২, কার্স ৩, আর্চার ২*, রাশিদ ৯; ডাফি ৬-২-১৬-১, ফোকস ৫-০-৩৩-১, টিকনার ৮-১-২৪-৪, স্মিথ ৫-০-২৭-২, স্যান্টনার ৮-১-৪৮-১, ব্রেসওয়েল ৪-০-১৬-১)
নিউ জিল্যান্ড: ৩৩.১ ওভারে ১৭৭/৫ (ইয়াং ০, রাভিন্দ্রা ৫৪, উইলিয়ামসন ২১, মিচেল ৫৬*, ল্যাথাম ২, ব্রেসওয়েল ৫, স্যান্টনার ৩৪*; আর্চার ১০-৪-২৩-৩, কার্স ৭.১-০-৪৩-০, কারান ৩-০-২৬-০, ওভারটন ৫-০-৩৬-১, রাশিদ ৮-১-৪৮-১)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৫ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: ব্লেয়ার টিকনার
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ২-০তে জয়ী নিউ জিল্যান্ড
আপনার মতামত লিখুন :