
সিলেটের অষ্টম উইকেটের পতন হলো যখন, তখনও ৬৬ রানে পিছিয়ে তারা আর সেঞ্চুরি থেকে ১৭ রান দূরে সৈকত আলি। সেখান থেকে তিনি খেললেন পৌনে দুইশ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। পাশাপাশি নবম উইকেটে ইবাদত হোসেনের সঙ্গে দেড়শর কাছাকাছি জুটিতে লিড এনে দিলেন দলকে। ব্যাট হাতে তাদের উজ্জ্বল দিনে একাই ৯ উইকেট শিকার করলেন রকিবুল হাসান।
ড্রয়ের পথে জাতীয় ক্রিকেট লিগে (এনসিএল) সিলেট ও ময়মনসিংহ বিভাগের ম্যাচ। তৃতীয় দিন ৪৮৯ রানে অলআউট হয়ে প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানের লিড নেয় সিলেট। দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ময়মনসিংহ দিন শেষ করেছে বিনা উইকেটে ৫৮ রানে। ৩০ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
আগের দিন ৫৩ রানে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে মাঠ ছাড়া সৈকত সোমবার আবার ব্যাটিংয়ে নেমে ১৭৫ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেলেন ২৩২ বলে। ১৯ চার ও ৮ ছক্কায় গড়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরির ইনিংসটি।
সাত নম্বরে নেমে ৯ চার ও এক ছক্কায় ১৬১ বলে ক্যারিয়ার সেরা ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন তোফায়েল আহমেদ। ১০ নম্বরে ইবাদত তার প্রথম ফিফটিতে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় করেন ১১০ বলে ৫৮।
সৈকত ও ইবাদতের জুটিতে আসে ১৪৮ রান। বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে নবম উইকেটে চতুর্থ সর্বোচ্চ জুটি এটি।
বাঁহাতি স্পিনার রকিবুল ৯ উইকেট নেন ১৬৮ রানে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এক ইনিংসে ৯ উইকেট পাওয়া বাংলাদেশের পঞ্চম বোলার তিনি। দুইবার এই নজির আছে আব্দুর রাজ্জাকের। সানজামুল ইসলাম, সাকলাইন সজিব ও মোশাররফ হোসেন রুবেলের একবার করে। তাদের মধ্যে সেরা বোলিংয়ের তালিকায় রকিবুল আছেন ষষ্ঠ স্থানে।
২৩ বছর বয়সী রকিবুলের আগের সেরা বোলিং ছিল ৫৬ রানে ৮ উইকেট।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে স্বাগতিক দল। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান তোফায়েল ও রেজাউর রহমান রাজা দলের স্কোর পার করেন আড়াইশ।
৮৭ বলে ৩১ রান করে ফেরেন রাজা। তোফায়েলের সঙ্গে তার জুটিতে আসে ৭৭ রান।
রাজার বিদায়ের পর আবার ব্যাটিংয়ে নামেন সৈকত। তোফায়েল ফিফটি করেন ১২১ বলে। তাকে ফেরানোর পর সৈয়দ খালেদ আহমেদকে দ্রুত বিদায় করেন রকিবুল। সিলেটের প্রথম আট ব্যাটসম্যানই তার শিকার।
সেখান থেকেই সৈকত ও ইবাদতের বড় জুটিতে লিড পায় সিলেট। সৈকত সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ১৭৮ বলে, ২০৫ বলে পা রাখেন দেড়শতে।
তার চমৎকার ইনিংসটি থামান পেসার শহিদুল ইসলাম। রকিবুলের ১০ উইকেট পাওয়ার সম্ভাবনাও তাতে শেষ হয়ে যায়। পরে ইবাদতকে ফিরিয়ে সিলেটের ইনিংস গুটিয়ে দেন তিনি।
দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে দিনের ১১ ওভার নিরাপদে কাটিয়ে দেন মাহফিজুল ও মোহাম্মদ নাইম শেখ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ময়মনসিংহ ১ম ইনিংস: ৪০১
সিলেট ১ম ইনিংস: ১৩০.৩ ওভারে ৪৮৯ (আগের দিন ১৯৮/৫) (সৈকত ১৭৫, তোফায়েল ৭৯, রাজা ৩১, খালেদ ১১, ইবাদত ৫৮, নাবিল ০*; আবু হায়দার ১৩-২-৪০-০, শহিদুল ১৮-০-৭৭-১, মারুফ ১৫-২-৬৭-০, রকিবুল ৫৫.৩-১০-১৬৮-৯, শুভাগত ২৫-৩-৯৩-০, আইচ ৩-০-২৬-০, আরিফুল ১-০-২-০)
ময়মনসিংহ ২য় ইনিংস: ১১ ওভারে ৫৮/০ (মাহফিজুল ৩০*, নাঈম শেখ ১৯*; খালেদ ৪-১-৭-০, রাজা ২-০-২১-০, নাবিল ৩-০-২১-০, ইবাদত ২-০-৩-০)
আপনার মতামত লিখুন :