
জাতীয় ক্রিকেট লিগ
প্রথম ইনিংস যেখানে শেষ করেছিলেন, সেখান থেকেই যেন শুরু করলেন ইয়াসির আলি। দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচে জোড়া সেঞ্চুরির কীর্তি গড়ার দারুণ সম্ভাবনা জাগালেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই স্বাদ না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হলো তাকে।
রাজশাহীতে জাতীয় ক্রিকেট লিগের (এনসিএল) ম্যাচে সোমবার ২৬ রান নিয়ে খেলতে নেমে ৯২ রানে আউট হন ইয়াসির। ১২৩ বলের ইনিংসে ২ ছক্কার সঙ্গে মারেন ৭টি চার। প্রথম ইনিংসে ১২৯ রান করেছিলেন তিনি।
ইয়াসিরের সৌজন্যে ৯ উইকেটে ২৭৭ রান করে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে চট্টগ্রাম। রাজশাহীকে ছুড়ে দেয় ৪৮৩ রানের বিশাল লক্ষ্য।
পাহাড়সম রান তাড়ায় ৪ উইকেটে ২১৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করেছে রাজশাহী। ম্যাচ জিততে শেষ দিনে তাদের চাই ২৬৪ রান, চট্টগ্রামের প্রয়োজন আর ৬ উইকেট।
৪ উইকেটে ১৪৩ রান নিয়ে দিন শুরু করা চট্টগ্রামকে পঞ্চাশ ছোঁয়া জুটি উপহার দেন ইরফান শুক্কুর ও ইয়াসির। ৭৪ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন ইয়াসির। অল্পের জন্য সেই স্বাদ পাননি ইরফান, ফেরেন ৫ চারে ৪১ রান করে।
নাঈম হাসান ও হাসান মুরাদকে নিয়ে দলের রান বাড়াতে থাকেন ইয়াসির। ৪টি চারে ২৩ বলে ২২ রান করেন নাঈম। ৫ চারে ৩৯ বলে ৩২ রান আসে মুরাদের ব্যাট থেকে। সেঞ্চুরি থেকে ৮ রান দূরে থাকতে আসাদউজ্জামান পায়েলের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ইয়াসির।
রাজশাহীর হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন শফিকুল ইসলাম, পায়েলের প্রাপ্তি তিনটি।
রান তাড়ায় ষষ্ঠ ওভারে দলের অধিনায়ক সাব্বির হোসেনকে হারায় রাজশাহী। তবে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে দলের রানের চাকা সচল রাখেন হাবিবুর রহমান। কিন্তু দ্রুতই থেমে যায় তার ঝড়। ৩ ছক্কা ও ৪টি চারে ৩৩ বলে ৪৫ রান করে ফিরে যান তিনি।
কয়েক ওভার পর বিদায় নেন রহিম আহমেদও। ভালো শুরু পেয়ে ইনিংস বড় করতে পারেননি সাব্বির রহমান। ২ ছক্কা ও ৩টি চারে ২৭ বলে ৩১ রান করেন তিনি।
দিনের বাকি সময় নিরাপদে কাটিয়ে দেন প্রিতম কুমার ও মেহরব হাসান। ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৫৬ রানে খেলছেন প্রিতম। ৫৪ রান করতে ২ ছক্কা ও ৬ চার মারেন মেহরব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৪০১
রাজশাহী ১ম ইনিংস: ১৯৬
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৬৩.৫ ওভারে ২৭৭/৯ ডিক্লে. (আগের দিন ১৪৩/৪) (ইয়াসির ৯২, ইরফান ৪১, নাঈম হাসান ২২, হাসান মুরাদ ৩২, শরীফ ০, মেহেদি ১; সুজন ৪-১-১৬-০, তাইজুল ২৬-০-১২৯-২, শফিকুল ১৮-২-৬৬-৪, পায়েল ৯.৫-০-৩৫-৩, মেহরব ৬-০-২৭-০)
রাজশাহী ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৪৮৩) ৪২ ওভারে ২১৯/৪ (হাবিবুর ৪৫, সাব্বির হোসেন ১৭, রাহিম ৯, প্রিতম ৫৬, সাব্বির রহমান ৩১, মেহরব ৫৪; ফাহাদ ৫-১-৩৩-১, মেহেদি ২-০-২৮-০, মুরাদ ১৪-৪-৫১-০, শরীফ ৭-০-৪০-২, নাঈম ১২-২-৬২-০, জয় ২-০-৪-০)
জিশানের অপরাজিত ৮০ রানের ইনিংসে ঢাকার লিড
আগের দিন সেঞ্চুরি ছোঁয়া ইনিংসকে সঙ্গীর অভাবে বেশিদূর টেনে নিতে পারেননি নাঈম ইসলাম। ততক্ষণে অবশ্য একশ ছাড়ানো লিড পেয়ে যায় রংপুর। পরে ব্যাটিংয়ে নেমে জিশান আলমের চমৎকার ইনিংসে এগিয়ে গেছে ঢাকা।
সিলেটে সোমবার রংপুরের প্রথম ইনিংস থামে ৩৫৮ রানে। ১৩৭ রানের বড় লিড পায় দলটি। পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে ২ উইকেটে ২১২ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শেষ করে ঢাকা। এখন তারা এগিয়ে ৭৫ রানে।
১৯ চারে ১৩৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন নাঈম। তিনি ছাড়া দলটির আর কেউ ফিফটিও করতে পারেননি।
৮ উইকেটে ৩০৮ রান নিয়ে খেলতে নেমে নতুন দিনে ৫০ রান রান যোগ করতে পারে রংপুর। ৩ চারে ২০ রান করেন রবিউল। শেষ উইকেটে নাঈমকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন মেহেদি হাসান।
সাদমান হোসেন ও রনি তালুকদারের ব্যাটে শুরুটা ভালো পায় ঢাকা। কিন্তু তাদের কেউ ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৬ চারে ৩৭ রান করা সাদমানের বিদায়ে ভাঙে ৭২ রানের উদ্বোধনী জুটি।
কয়েক ওভার পর ফিরে যান ৭ চারে ৪২ রান করা রনিও। এরপর বাকি সময় আর দলকে উইকেট হারাতে দেননি আশিকুর রহমান ও জিশান।
১ ছক্কা ও ৩ চারে ৪৬ রানে অপরাজিত আছেন আশিকুর। ১২ চারে ৮০ রান নিয়ে খেলছেন জিশান। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরির হাতছানি তার সামনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: ২২১
রংপুর ১ম ইনিংস: ১১৪.৩ ওভারে ৩৫৮ (আগের দিন ৩০৮/৮) (নাঈম ইসলাম ১৩৭*, রবিউল ২০, মেহেদি হাসান ৭; রিপন ২২-১-৬১-৩, সালাউদ্দিন ১২-২-৫১-২, আনামুল ২১-২-৭৫-১, নাজমুল অপু ৩-০-১৪-০, জিশান ৩-০-১৫-০, তাইবুর ৩৩-১০-৮৩-৩, রাব্বী ২০.৩-৪-৪৬-১)
ঢাকা ২য় ইনিংস: ৬৩ ওভারে ২১২/২ (সাদমান ৩৭, রনি ৪২, শিবলি ৪৬*, জিশান ৮০*; রবিউল ১০-১-৫১-১, মেহেদি হাসান ১০-১-৩৪-১, হাসিম ২১-৮-৪১-০, নাসির ৬-১-২৩-০, আলাউদ্দিন ৬-১-১৯-১, আল মামুন ৪-২-৪-০, তানবীর ৩-০-২২-০, মিম ৩-০-১২-০)
আপনার মতামত লিখুন :