
এনসিএল
বয়স ৩৯ ছুঁইছুঁই। কিন্তু নাঈম ইসলামের ব্যাটের ধার যেন আছে আগের মতোই। জাতীয় ক্রিকেট লিগের নতুন আসরের শুরুতে চমৎকার এক সেঞ্চুরি উপহার দিলেন অভিজ্ঞ ক্রিকেটার। প্রথমবারের মতো তিন অঙ্কের উষ্ণ ছোঁয়া পেলেন আবু হায়দার রনি।
সিলেট একাডেমি মাঠে রোববার ঢাকা বিভাগের বিপক্ষে ১৬ চারে ১১১ রান করে অপরাজিত আছেন রংপুর বিভাগের হয়ে খেলা নাঈম। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরির রেকর্ডটি আগে থেকেই তার। ২৯১ ইনিংসে ৩৪তম শতকে সেটিকে আরও সমৃদ্ধ করলেন তিনি।
নাঈমের সেঞ্চুরিতে ৮ উইকেটে ৩০৮ রান করেছে রংপুর। ৮৭ রানে এগিয়ে থেকে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে তারা।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আসরের অন্য ম্যাচে অপরাজিত ১০৭ রান করেন ময়মনসিংহের আবু হায়দার। সিলেটের বিপক্ষে তার ১০৫ বলের ইনিংসটি গড়া ৬টি ছক্কা ও ১০ চারে।
নতুন দিনের শুরুতেই আবদুল্লাহ আল মামুনকে (৪টি চারে ৩৭) হারায় ২ উইকেটে ৬৫ রান নিয়ে খেলতে নামা রংপুর। নাঈমকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে ফিরে যান আবু হাসিমও। অধিনায়ক আকবর আলিও পারেননি বড় ইনিংস খেলতে।
এক প্রান্তে নিজের মতো খেলে যান নাঈম। দ্বিতীয় সেশনে ১২৬ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন তিনি। আরেক প্রান্তে ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে নাঈমকে সঙ্গে দিয়ে যান তানবীর হায়দার।
ফিফটির পর দ্রুত রান বাড়াতে শুরু করেন নাঈম। কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের স্বাদ পান ১৯৯ বলে। পঞ্চাশ থেকে সেঞ্চুরিতে পৌঁছাতে তার লাগে ৭৩ বল।
১ ছক্কা ও ৫ চারে ৪৫ রান করা তানবীরকে দিনের শেষ সেশনের শুরুতে বোল্ড করে ৮৮ রানের জুটি ভাঙেন রিপন মন্ডল। পরের বলেই নাসির হোসেনের স্টাম্প ভেঙে দেন এই পেসার।
এরপর আলাউদ্দিন বাবুকে নিয়ে দলের রান তিনশর কাছে নিয়ে যান নাঈম। ৩ চারে ২১ রান করা আলাউদ্দিনের বিদায়ে ভাঙে ৫৬ রানের জুটি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ১ম ইনিংস: ২২১
রংপুর ১ম ইনিংস: ৯৭ ওভারে ৩০৮/৮ (আগের দিন ৬৫/২) (মামুন ৩৭, আবু হাসিম ২৮, নাঈম ইসলাম ১১১*, আকবর ১৯, তানবীর ৪৫, নাসির ০, আলাউদ্দিন ২১, রবিউল ৪; রিপন ১৯-১-৫৪-৩, সালাউদ্দিন ১২-২-৫১-২, আনামুল ১৭-২-৬০-১, নাজমুল অপু ৩-০-১৪-০, জিশান ৩-০-১৫-০, তাইবুর ২৪-৮-৫৯-২, রাব্বী ১৯-৪-৪২-০)
আবু হায়দারের অপরাজিত ১০৭, রকিবুলের ৫ উইকেট
আগের দিন আরিফুল ইসলাম লাল বলের ক্রিকেট ক্যারিয়ারে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পান। ম্যাচের দ্বিতীয় দিন একই অভিজ্ঞতা হয় আবু হায়দারের। তাদের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৪০১ রান করে ৭ উইকেট ২৬৮ রান নিয়ে নতুন দিন শুরু করা ময়মনসিংহ।
পরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৫ উইকেটে ১৯৮ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে সিলেট। ২০৩ রানে পিছিয়ে আছে তারা।
সিলেটের পড়া পাঁচটি উইকেটই নেন রকিবুল হাসান। প্রথম শ্রেণির ক্যারিয়ারে পঞ্চমবার এই স্বাদ পেলেন বাঁহাতি এই স্পিনার।
১৬ রান নিয়ে খেলতে নামা আবু হায়দার ৫৫ বলে ফিফটিতে পা রাখেন। এই সময়ে দুটি ছক্কা ও পাঁচটি চার মারেন তিনি। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেওয়া শহিদুল ইসলাম ৩ চারে ৩৩ রান করে ফেরেন।
পরে রকিবুলের সঙ্গে ৫১ রানের জুটিতে দলের রান চারশ কাছে নিয়ে যান আবু হায়দার। তাদের যুগলবন্দীতে রকিবুলের অবদান ২৭ বলে ৬ রান। এই সময়ে দ্রুত রান বাড়িয়ে ১০৩ বলে কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কের স্বাদ পান আবু হায়দার।
সিলেটের হয়ে দুটি উইকেট নেন পেসার এবাদত হোসেন, আর তিনটি প্রাপ্তি আরেক পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদের।
জবাব দিতে নেমে সৈকত আলি ও জাকির হাসানের ব্যাটে ভালো শুরু পায় সিলেট। ৭ চারে ৩৮ রান করা জাকিরের বিদায়ে ভাঙে ৭৩ রানের উদ্বোধনী জুটি। কয়েক ওভার পর ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ হয়ে মাঠ ছাড়েন ৯৪ বলে ফিফটি করা সৈকত।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় সিলেট। ভালো শুরু কাজে লাগাতে পারেননি অমিত হাসান (৪টি চারে ২৩), মিজানুর রহমান (৩ চারে ২৬) ও অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম (২ চারে ২০)।
১৭৫ রানে ৫ উইকেট হারানো দলকে টানছেন তোফায়েল আহমেদ ও রেজাউর রহমান। ১ চারে ১১ রানে অপরাজিত তোফায়েল, ৩ চারে ১৪ রানে খেলেছেন রেজাউর।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ময়মনসিংহ ১ম ইনিংস: ১০৩.৪ ওভারে ৪০১ (আগের দিন ২৬৮/৭) (আবু হায়দার ১০৭*, শহিদুল ৩৩, রাকিবুল ৬, মারুফ ২; ইবাদত ২০-৪-৭৬-২, খালেদ ১৯-৪-৭৬-৩, তোফায়েল ১২-৪-২৬-০, রাজা ১৪-১-৭১-১, নাবিল ৩২-৪-১১৫-০, গালিব ৬.৪-২-২৪-৩)
সিলেট ১ম ইনিংস: ৫৭ ওভারে ১৯৮/৫ (সৈকত ৫৩ [আহত অবসর], জাকির ৩৮, সায়েম ২৬, অমিত ২৩, মুশফিক ২০, গালিব ৮, তোফায়েল ১১*, রাজা ১৪*; আবু হায়দার ৭-১-২৭-০, শহিদুল ৮-০-৩১-০, মারুফ মৃধা ৭-০-৩৮-০, রাকিবুল ২৪-৫-৬৮-৫, শুভাগত ১১-২-৩১-০)
আপনার মতামত লিখুন :