
রাজশাহীর বিপক্ষে ব্যাটে-বলে দারুণ সময় কাটছে চট্টগ্রামের ক্রিকেটারদের। ৬ উইকেট নিয়ে দলকে বড় লিড এনে দিয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার হাসান মুরাদ। সেঞ্চুরির পর ফিফটির দেখা পেয়েছেন মাহমুদুল হাসান জয়। জাতীয় ক্রিকেট লিগে এদিন বরিশালের বিপক্ষে হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট নিয়ে চমক দেখিয়েছেন আফিফ হোসেন।
রাজশাহী বিভাগীয় স্টেডিয়ামে রোববার ২ উইকেটে ১ রান নিয়ে দিন শুরু করে রাজশাহী। মুরাদের স্পিনে ৫৪.৪ ওভারে ১৯৬ রানে গুটিয়ে যায় দলটির প্রথম ইনিংস।
শুরুতেই আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান রাহিম আহমেদকে ফিরিয়ে দেন মেহেদি হাসান। প্রিতম কুমারকে বোল্ড করে দ্রুত ফেরান নাঈম হাসান।
এক প্রান্ত আগলে রেখে দুই ছক্কা ও সাত চারে ৮১ বলে ৫৭ রান করা সাব্বির হোসেনকে এলবিডব্লির ফাঁদে ফেলেন মুরাদ। এসএম মেহরব ও শাকির হোসেনকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের চতুর্দশ পাঁচ উইকেট।
পাল্টা আক্রমণে ৭৫ বলে দুই ছক্কা ও ছয় চারে ৬৫ রান করা সাব্বিরকে বিদায় করেন জয়। পরে তিনি নেন ৪১ রানের আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলা তাইজুল ইসলামের উইকেট।
৩৯ রানে ৬ উইকেট নিয়ে চট্টগ্রামের সফলতম বোলার মুরাদ। জয় ২ উইকেট নেন ৮ রানে।
সুযোগ থাকলেও রাজশাহীকে ফলো অন করায়নি চট্টগ্রাম। জয়ের পঞ্চাশে ৪ উইকেটে ১৩৩ রানে দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষ করেছে তারা। প্রথম ইনিংসে ২০৫ রানের লিড মিলিয়ে চট্টগ্রাম এগিয়ে ৩৩৮ রানে, হাতে ৬ উইকেট।
আবারও দুই অঙ্কে ছুঁয়ে ফেরেন সাদিকুর রহমান। এবার রানের খাতাই খুলতে পারেননি অভিজ্ঞ মুমিনুল হক। শফিকুল ইসলামের বলে তাইজুলের হাতে ক্যাচ দেন তিনি শূন্য রানে।
ওয়ানডে ঘরানার ব্যাটিংয়ে পঞ্চাশ ছুঁয়েই ফেরেন জয়। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান এবার ৫১ বলে দুই ছক্কা ও পাঁচ চারে করেন ৫১ রান।
প্রথম ইনিংসের আরেক সেঞ্চুরিয়ান ইয়াসির আলি ব্যাট করছেন ২৬ রানে। তার সঙ্গী ইরফান শুক্কুর খেলছেন ১৮ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ৪০১
রাজশাহী ১ম ইনিংস: (আগের দিন ১/২) ৫৪.৪ ওভারে ১৯৬ (সাব্বির হোসেন ৫৭, রাহিম ৭, প্রিতম ৪, সাব্বির রহমান ৫৪, মেহরব ৬, শুভ্র ৯, তাইজুল ৪১, সুজন ১২, পায়েল ০*; মেহেদি ৭-৩-১৭-১, মুরাদ ১৮.৪-৬-৩৯-৬, নাঈম ১২-১-৮০-১, ফাহাদ ৬-২-১৮-০, শরীফ ৮-১-২৮-০, মুমিনুল ১-০-৩-০, জয় ২-০-৮-২)
চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৩০ ওভারে ১৩৩/৪ (সাদিকুর ১৬, জয় ৫১, মুমিনুল ০, শাহাদাত ১৭, ইয়াসির ২৬*, ইরফান ১৮; সুজন ৪-১-১৬-০, তাইজুল ১৩-০-৫৯-১, শফিকুল ৯-১-৩৫-৩, পায়েল ৪-০-১৯-০)
আফিফের হ্যাটট্রিকে মহাবিপদে বরিশাল
খুলনায় এক দিনে দেখা মিলেছে তিন ইনিংসের। সেখানে আফিফের হ্যাটট্রিকে ফলো-অনে পড়েছে বরিশাল।
খুলনা বিভাগীয় স্টেডিয়ামে রোববার ৯ উইকেটে ৩১২ রান নিয়ে দিন শুরু করে খুলনা। ১ রান যোগ করেই তারা হারায় শেষ উইকেট।
৭৩ রান করে ফেরেন শেখ পারভেজ জীবন।
ব্যাট করতে নেমে আফিফের অফ স্পিনে প্রথম ইনিংসে কেবল ১২৬ রানেই গুটিয়ে যায় খুলনা।
এক প্রান্ত আগলে রেখে সর্বোচ্চ ৫৭ রান করেন ওপেনার জাহিদউজ্জামান। মাঝে তাকে কিছুটা সঙ্গী দেন মইন খান।
পরপর তিন বলে শেষ তিন উইকেট নিয়ে হ্যাটট্রিক করেন আফিফ। সঙ্গে ক্যারিয়ারে দ্বিতীয়বারের মতো নেন পাঁচ উইকেট।
ফলো অনে পড়ে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে ফিরেছেন জাহিদউজ্জামান।
ভালো শুরুটা বড় করতে ব্যর্থ হয়েছেন ইফতেখার হোসেন ইফতি (৪০) ও ফজলে মাহমুদ (৩২)। তাই এখনও চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়ের শঙ্কা।
দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১১৯ রানে দিন শেষ করেছে বরিশাল। অভিজ্ঞ শামসুর রহমান খেলছেন ২৪ রানে। তাসামুল হক ব্যাট করছেন ৩ রানে।
এখনও ৬৮ রানে পিছিয়ে বরিশাল।
প্রথম ইনিংসে ৩১ রানে ৬ উইকেট নেওয়া আফিফ এবার এখনও পর্যন্ত উইকেটশূন্য। নাহিদ ইসলাম নিয়েছেন ২ উইকেট।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
খুলনা ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩১২/৯) ৮৬.১ ওভারে ৩১৩ (পারভেজ ৭৩, সফর ৬; ইয়াসিন ১২.১-১-৫০-২, রুয়েল ১৫-০-৭৫-৩, মইন ১৯-৫-৫৬-৩, তানভির ২৮-৬-৯৫-১, শামসুর ৭-০-১৭-১, ইফতেখার ৩-০-১২-০, সালমান ১-০-২-০)
বরিশাল ১ম ইনিংস: ৪১.৩ ওভারে ১২৬ (ইফতি ৬, জাহিদুজ্জামান ৫৭, সালমান ইমন ১৭, শামসুর ৩, তাসামুল ০, মইন ২৬, ফজলে মাহমুদ ১৩, শামসুল ২, তানভির ০, মিশু ০, রুয়েল ০; হালিম ৮-২-২২-১, নাহিদুল ৫-১-৮-০, সফর-৭-৩-২১-০, আফিফ ১০.৫-২-৩১-৬, ইয়াসিন ৬-০-২৬-১, পারভেজ জীবন ৪.৪-১৬-০-১)
বরিশাল দ্বিতীয় ইনিংস: (ফলো-অন) ৩৯.২ ওভারে ১১৯/৪ (ইফতি ৪০, জাহিদুজ্জামান ০, ফজলে মাহমুদ ৩২, সালমান ইমন ১৬, শামসুর ২৪*, তাসামুল ৩*; হালিম ৫-২-১৪-০, নাহিদুল ১৩.২-৩-৩২-২, সফর ৪-০-১৩-১, আফিফ ৯-১-২৭-০, ইয়াসিন ৮-১-২৯-১)
আপনার মতামত লিখুন :