
ইংল্যান্ড-নিউ জিল্যান্ড
যে উইকেটে মুখ থুবড়ে পড়ল সতীর্থরা, সেখানেই ব্যাট হাতে ছড়ি ঘোরালেন হ্যারি ব্রুক। ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে তার অসাধারণ সেঞ্চুরিতে কোনোমতে দুইশ পার করেছিল ইংল্যান্ড। রান তাড়ায় অনায়াস জয় তুলে নিয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল নিউ জিল্যান্ড।
মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে রোববার প্রথম ওয়ানডে ৪ উইকেটে জিতেছে নিউ জিল্যান্ড। প্রতিপক্ষকে ২২৩ রানে গুটিয়ে ৮০ বল বাকি থাকতে কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পৌঁছে গেছে স্বাগতিকরা।
জ্যাকারি ফোকস ও ম্যাট হেনরির ছোবলে ৫৬ রানে ৬ উইকেট হারানো দলকে একাই টানেন ব্রুক। ক্যারিয়ার সেরা ইনিংসে ১১ ছক্কা ও ৯ চারে ১০১ বলে ১৩৫ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক। ম্যাচ হারলেও সেরার পুরস্কার জেতেন তিনি।
ব্রুকের সঙ্গে সপ্তম উইকেটে ৮৭ রানের জুটিতে ১ ছক্কা ও ৬ চারে ৪৬ রান করেন জেমি ওভারটন। এই দুইজন ছাড়া ইংল্যান্ডের আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি।
ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে ইনিংসে ৪১ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন ফোকস। ৫৫ রান দিয়ে ৩ শিকার ধরেন ডাফি। হেনরির প্রাপ্তি ৫৩ রানে দুটি।
লক্ষ্য তাড়ায় দলের জয় সঙ্গে নিয়ে মাঠ ছাড়েন ড্যারিল মিচেল। ২ ছক্কা ও ৭ চারে ৭৮ রান করেন তিনি। ৫১ রান করতে ৬টি চার মারেন মাইকেল ব্রেসওয়েল।
বে ওভালে এদিন টস জিতে ফিল্ডিংয়ে নেমে প্রথম বলেই প্রতিপক্ষ শিবিরে হানা দেয় নিউ জিল্যান্ড। ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে জেমি স্মিথের স্টাম্প ভেঙে দেন হেনরি।
পরের ওভারে জোড়া শিকার ধরেন ফোকস। বেন ডাকেটকে কট বিহাইন্ড করার পর বোল্ড করে দেন অভিজ্ঞ জো রুটকে। পরে জ্যাকব বেথেলের স্টাম্পও ভেঙে দেন এই পেসার।
জস বাটলারকে টিকতে দেননি হেনরি। স্যাম কারান হন ফোকসের শিকার। ইংলিশ দুই ব্যাটসম্যানই ধরা পড়েন কিপারের গ্লাভসে।
দলের ব্যাটিং ধসে এক প্রান্তে দ্রুত রান বাড়াতে থাকেন ব্রুক। ৩৬ বলে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি। তাকে অনেকটা সময় সঙ্গ দেন ওভারটন। তাদের ব্যাটে দেড়শর কাছে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ডের রান।
নতুন স্পেলে আক্রমণে এসে ওভারটনকে ফিরিয়ে জমে যাওয়া এই জুটির প্রতিরোধ ভাঙেন ডাফি। পরের বলেই এই পেসার বিদায় করেন ব্রাইডন কার্সকে। আদিল রাশিদকেও দ্রুত ফেরান ডাফি।
৩০ ওভার শেষে ইংল্যান্ডের রান ৯ উইকেটে ১৬৬। সেঞ্চুরি থেকে তখনও ১৫ রান দূরে ব্রুক। ডাফিকে টানা তিন ছক্কায় কাঙ্ক্ষিত তিন অঙ্কে পৌঁছে যান তিনি। এরপর হেনরির ওভারের মারেন আরও তিনটি ছক্কা।
ব্রুকের ঝড়ে ৫ ওভারে ৫৭ রান তুলে ফেলে ইংল্যান্ড। লুক উডের সঙ্গে ৫৭ রানের জুটিতে তার অবদান ৫০। স্যান্টনারের বলে মিডউইকেট সীমানায় ব্রুক ধরা পড়লে ভাঙে ওয়ানডেতে দশম উইকেটে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ জুটি।
রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি নিউ জিল্যান্ডের। ব্রাইডন কার্সের পরপর দুই বলে বিদায় নেন উইল ইয়াং ও কেন উইলিয়ামসন। সাত মাস পর জাতীয় দলের হয়ে খেলতে নেমে গোল্ডেন ডাকের তেতো স্বাদ পান উইলিয়ামসন। ওয়ানডে ক্যারিয়ারে প্রথমবার এমন অভিজ্ঞতা হলো কিউইদের ইতিহাসের সফলতম ব্যাটসম্যানের।
রাচিন রাভিন্দ্রার পর টম ল্যাথামও হাল ধরতে পারেননি দলের। ৬৬ রানে ৪ উইকেট হারানো কিউইদের লক্ষ্যের পথে এগিয়ে নেন মিচেল ও ব্রেসওয়েল। দুজনে গড়েন ৯২ রানের জুটি।
৬১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন মিচেল। ৫০ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়া ব্রেসওয়েল কাটা পড়েন রান আউটে। পরে মিচেল ও স্যান্টনারের ৪৯ রানের জুটিতে লক্ষ্যের কাছে পৌঁছে যায় দলটি। স্যান্টনার কাজ শেষ করে ফিরতে না পারলেও দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন মিচেল।
হ্যামিল্টনে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে আগামী বুধবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড: ৩৫.২ ওভারে ২২৩ (স্মিথ ০, ডাকেট ২, রুট ২, বেথেল ২, ব্রুক ১৩৫, বাটলার ৪, কারান ৬, ওভারটন ৪৬, কার্স ০, রাশিদ ৪, উড ৫*; হেনরি ৯-২-৫৩-২, ফোকস ৭-১-৪১-৪, স্মিথ ৬-০-৪৯-০, ডাফি ৬-০-৫৫-৩, স্যান্টনার ৭.২-০-২২-১)
নিউ জিল্যান্ড: ৩৬.৪ ওভারে ২২৪/৬ (ইয়াং ৫, রাভিন্দ্রা ১৭, উইলিয়ামসন ০, মিচেল ৭৮*, ল্যাথাম ২৪, ব্রেসওয়েল ৫১, স্যান্টনার ২৭, স্মিথ ৫*; উড ৮-০-৫৪-১, কার্স ১০-০-৪৫-৩, রাশিদ ৮.৪-০-৬৯-১, ওভারটন ৬-০-৩০-০, কারান ৪-০-২৪-০)
ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: হ্যারি ব্রুক
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ১-০তে এগিয়ে নিউ জিল্যান্ড
আপনার মতামত লিখুন :