সংবাদ সম্মেলনে উইকেট নিয়ে প্রশ্ন ছুটে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক শেই হোপের দিকে। তিনি বললেন, ‘এখনও দেখতে পারিনি, হয়তো মিনিট দশেক পর দেখব..।” পাশে তখন ড্যারেন স্যামির মুখে চওড়া হাসি। এমনিতে তার মুখে হাসি সবসময় লেগেই আছে। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কোচের এই হাসি যে অর্থপূর্ণ, তা বোঝা গেল একটু পর। হাসতে হাসতেই তিনি বললেন, এরকম কিছু আগে কখনও দেখেননি।
গত বুধবার বাংলাদেশে আসার পর বৃহস্পতিবার মাঠে এসে এক দফায় উইকেট দেখেছেন স্যামি। ক্যারিবিয়ানদের প্রথম আনুষ্ঠানিক অনুশীলন সেশন ছিল শুক্রবার। এ দিনও সময় নিয়ে উইকেট পর্যবেক্ষণ করলেন সাবেক এই ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক।
খেলেয়াড়ি জীবনে বেশ কয়েকবার বাংলাদেশে এসেছেন স্যামি। মিরপুরে খেলেছেন অনেক ম্যাচ। বিপিএলও খেলেছেন, রাজশাহীর ফ্র্যাঞ্চাইজিকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলেছেন। সেই আসরেও মিরপুরের উইকেটে ব্যাটসম্যানদের ভোগান্তি হয়েছিল প্রচুর। এখানকার উইকেট নিয়ে তাই তার ভালোই ধারণা আছে।
সেই তার কাছেও এবারের উইকেট অচেনা রূপে ধরা দিয়েছে, বললেন তিনি সংবাদ সম্মেলনে। মাত্রই ভারতে টেস্ট সিরিজ খেলে আসায় মানিয়ে নিতে কিছুটা সুবিধা হবে বলেও বিশ্বাস তার।
“অধিনায়ক এখনও উইকেট দেখেনি, তবে আমি দেখেছি। জানি না, ঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারব কি না… তবে এমন কিছু আগে কখনও দেখিনি। তবে আমরা সবাই জানি, উপমহাদেশের চ্যালেঞ্জ কেমন, বিশেষ করে ব্যাটারদের জন্য। আমার মনে হয়, ভারত থেকে আসায় ছেলেদের এবার কিছুটা সুবিধা হবে। ছেলেরা এই ধরনের বা সবচেয়ে কাছাকাছি ধরনের কন্ডিশনে অভ্যস্ত হয়ে এসেছে।”
অধিনায়ক শেই হোপ বললেন, আচরণ যেমনই হোক, উইকেটে মানিয়ে নেওয়াই হবে গুরুত্বপূর্ণ।
“কোচের সঙ্গে যতটুকু আলোচনা হয়েছে, মনে হচ্ছে আমরা যেমন উইকেটে খেলে অভ্যস্ত, এর চেয়ে ভিন্ন হবে উইকেট। ব্যাপারটি হলো, কত দ্রুত আমরা মানিয়ে নিতে পারি। বিদেশের কন্ডিশনে এরকম উইকেট যখন আমরা পাচ্ছি, মূল ব্যাপার হলো মানিয়ে নেওয়া, বিশেষ করে ব্যাটিং গ্রুপ হিসেবে দ্রুত উইকেট পড়তে পারা এবং সেই অনুযায়ী খেলা।”
বিসিবির হেড অফ টার্ফ ম্যানেজমেন্ট টমি হেমিং ও মাঠ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উইকেট দেখতে কালো হলেও আচরণে হবে ভালো।
তবে স্যামি-হোপের ঘণ্টা দেড়েক আগে বাংলাদেশ কোচ ফিল সিমন্স বলে গেছেন, প্রথাগত মিরপুরের উইকেট বলেই মনে হচেছ তার।
“আমার চেয়ে মিরপুরের উইকেট সম্পর্কে আপনারা বেশি ভালো জানেন। আপনারা আমাকে বলতে পারেন (উইকেট কেমন)। আমার তো উইকেট দেখে নরম্যাল মিরপুরের উইকেটই মনে হচ্ছে। সাধারণত এখানে টার্ন আছে, যা ভালো (আমাদের জন্য)।”
উইকেট যেমনই হোক, সেটিকে খুব বেশি পাত্তা দিতে চান না ক্যারিবিয়ান কোচ স্যামি।
“জানি না, এটিকে (উইকেট) কীভাবে বর্ণনা করব। তবে আমি যেটা বলতে পারি, উইকেটকে আমরা আমাদের মাথায় ঢুকতে দেব না। যেখানেই যাই না কেন, আমাদের মন্ত্র তো একই, কন্ডিশন যা পাওয়া যাবে, দ্রুত বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং এরপর সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সফল হওয়ার জন্য কোন স্কিলসেট এখানে প্রয়োজন। এরপর নিজের ওপর আস্থা রাখতে হবে মেলে ধরার জন্য। সেখানেই নিজের খেলায় কিছু যোগ করার ব্যাপার আসে।”
আপনার মতামত লিখুন :